
.
উনিশ শতকের আশির দশক পর্যন্ত জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিল রেডিওর প্রচলন।গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন দেশ-বিদেশের খবরাখবর জানা ও শুনা, সঙ্গীত শ্রবণের একমাত্র মাধ্যম ছিল বিভিন্ন কোম্পানীর নানাবিধ মডেলের তৈরীকৃত ট্রানজিস্টার বা রেডিও।বলা যায় রেডিও ছিলো তখন গ্রামের মানুষের বিনোদনের একটি মাধ্যম।এ রেডিও আবার পরিচালিত হতো একের অধিক ব্যাটারির মাধ্যমে।তখন গ্রামে বিদ্যুৎ ছিলো না।গ্রামের মানুষ ভাবতেন বিদ্যুৎ শুধু মাত্র শহরভিত্তিক।গ্রামের জন্য তা প্রযোজ্য নয়।কিন্তু আজ বাংলাদেশের গ্রামের প্রত্যেকটি ঘর বিদ্যুতায়িত।১৯৭৭ সালে আমি যখন মদন মোহন কলেজে পড়াশুনা করি।তখন একদিন এক বন্ধুর নিকট থেকে শুনতে পেলাম ন্যায্যমুল্যে মাত্র একশত পচিশ টাকায় চায়নার তৈরীকৃত রেডিও জিন্দাবাজারে একটি দোকানে মিনি সাইজের বিক্রি হচ্ছে।অবহিত হয়ে আমরা বেশ কয়েকজন ক্লাসমিট ঐ দোকানে যাই এবং পরদিন মোট ছয়জন বন্ধু ছয়টি রেডিও কিনি।এ রেডিওগুলির বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল মাত্র একটি ব্যাটারি দ্বারা পরিচালনা করা যেত।অনেকের রেডিও অল্পদিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়।কিন্তু আমার রেডিওটি ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ব্যবহার করে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্তায় রেখে প্রবাসের পথে পা বাড়াই।.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
সে সময় কিন্তু রেডিও’র লাইসেন্স করার বিধান ছিলো।১৯৬৮ সালে তখনকার সময়ে গ্রামের মেয়েরা লেখাপড়া করতেন না বা অভিভাবকমহল মেয়েদের স্কুলে পাঠাতেন না।সে সময় পাঠশালা উত্তীর্ণ এক মেয়ের বিয়েতে পিতৃপক্ষ থেকে অন্যান্য মালামালের সহিত একটি রেডিও প্রদান করা হয়।শশুর বাড়ি এসে ঐ মহিলা অধিক সময় রেডিও হাতে রাখতেন,শুনতেন খবর,গান ইত্যাদি।তা দেখে মহিলার ছোট ছোট দেবর,ননদরা ব্যঙ্গ করে ভাবীকে ডাকতেন ‘রেডিও’র মা বলে।এ নামে ডাকলে মহিলা অনেক খুশি হতেন বলে মনে হত।আজ রেডিও’র নাম নিশানা গিয়েছে মুছে।আজ আর কেউ আদরে বা অনাদরে এ নামটি মুখে নিতে শুনি না।. .
ডে-নাইট-নিউজ / মিজানুর রহমান মিজান
কপিরাইট © 2015-2025 Dnnbd.com, ডে-নাইট গ্রুপের একটি অংঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
Design & Developed by ICT Sky Ltd.
আপনার মতামত লিখুন: