প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: উত্তরের জেলা দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে শীতের দাপট দিন দিন বেড়েই চলেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে জেলার তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিনাজপুর জেলার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ ছিল শতকরা ৯৬ ভাগ। ঘন কুয়াশার কারণে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি, ফলে পুরো এলাকা ছিল ধূসর আবরণে ঢাকা।.
ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে ফুলবাড়ী পৌরশহরে মানুষের চলাচল ছিল স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক কম। দিনের বেলা কখনো কখনো সূর্যের দেখা মিললেও রোদের তাপ খুব একটা অনুভূত হয়নি। অপরদিকে বিকেল নামার সঙ্গে সঙ্গেই শীতের তীব্রতা আরও বেড়ে যাচ্ছে, যা ভোর পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে।.
উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া উত্তরের হিমেল হাওয়া শীতের অনুভূতিকে আরও কনকনে করে তুলেছে। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। ঠান্ডা থেকে বাঁচতে অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শরীর গরম করার চেষ্টা করছেন। একইসঙ্গে গবাদিপশুর শীত নিবারণের জন্য চটের বস্তা ও কাপড় ব্যবহার করা হচ্ছে।.
এই শীত সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে শিশু ও বৃদ্ধদের ওপর। শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে দিন দিন বাড়ছে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা। চিকিৎসা নিতে এসে ভিড় জমাচ্ছেন নানা বয়সী মানুষ।
শীতের প্রকোপে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। তীব্র ঠান্ডার কারণে অনেকেই কাজে যেতে পারছেন না। এতে তাদের আয় বন্ধ হয়ে পরিবার নিয়ে চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে।
ফুলবাড়ী পৌরশহরের রিকশাচালক বাবু ইসলাম বলেন, প্রচÐ শীতের কারণে লোকজন ঘরের বাইরে কম বের হওয়ায় রিকশা চালিয়েও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। এতে আয় রোজগার অনেকটাই কমে গেছে। এ কারণে অনেক রিকশাচালক রিকশাই বের করছেন না।.
উপজেলার পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের আদিবাসী নারী কৃষিশ্রমিক বিটিমাই মুর্মু বলেন, শীতের কারণে জমিতে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কাজ করতে গেলে ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে। কনকনে শীত আর হিমেল হাওয়ার কারণে গত দুদিন ধরে তিনি জমিতে কাজ করতে যেতে পারছেন না।.
দিনাজপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) থেকে কুয়াশার ঘনত্ব কিছুটা কমতে পারে। তবে চলতি ডিসেম্বরের শেষ দিকে একটি পূর্ণাঙ্গ শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে।.
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, শীতার্ত মানুষের সহায়তায় মন্ত্রণালয় থেকে প্রথম পর্যায়ে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯৫০টি কম্বল কিনে দুস্থ শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও ৩৪০টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে, সেগুলোও বিতরণ কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে। এছাড়া দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। প্রথম পর্যায়ের অবশিষ্ট ৩ লাখ টাকার সঙ্গে মিলিয়ে মোট ৬ লাখ টাকার কম্বল দ্রæত কিনে বিতরণ করা হবে।
.
.
ডে-নাইট-নিউজ /
আপনার মতামত লিখুন: