• ঢাকা
  • সোমবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৬ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

অযত্নে পড়ে থাকা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ পরিষ্কার করলো ‘আমরা করব জয়’


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:০২ পিএম;
অযত্নে পড়ে থাকা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ পরিষ্কার করলো ‘আমরা করব জয়’
অযত্নে পড়ে থাকা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ পরিষ্কার করলো ‘আমরা করব জয়’

নিরবে গেল ফুলবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস
অযতেœ পড়ে থাকা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ
পরিষ্কার করলো ‘আমরা করব জয়’
.


প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: ৪ ডিসেম্বর ছিল দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত দিবস। কারো কোনো উদ্যোগ না থাকায় নিরবে-নিভৃতে অনুষ্ঠিত হলো দিবসটি। তবে দিবসটি উপলক্ষে ব্যতিক্রম উদ্যোগ পালন করেছে বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সামাজিক ও মানবিক সংগঠন ‘আমরা করব জয় সমাজকল্যাণ সংস্থা’র সদস্যরা। .


    জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর ফুলবাড়ী মুক্ত হওয়ার পরে নিজে দেশ ভারতে ফিরে যাওয়ার সময় মাইন বিষ্ফোরণে শহীদ হওয়ায় ৩ জন ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্যের সম্মাননার্থে নির্মিত হয়েছিল ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের পূর্বপ্রান্তে ছোট যমুনা নদীর পশ্চিম তীরে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটি। যা পড়ে ছিল জঙ্গলে পরিণত হয়ে অবহেলা-অযতেœ।.


    সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় দা, কাস্তে, কোদাল, শাবলসহ বাঁশ ও সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড নিয়ে সেই স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালায় সংগঠনটির সদস্যরা।
    এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সাংবাদিক প্লাবন শুভ, সহসভাপতি পলাশ দাস বাপ্পী, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিঠুন দত্ত, কোষাধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য কংকনা রায়, সদস্য রাব্বী হাসান, সহযোগী সদস্য কৃপিতা রায় প্রমুখ। 
.


    সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন অবহেলা-অযতেœ থাকায় স্মৃতিস্তম্ভসহ আশাপাশ পুরো জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। সেই জঙ্গলে বসে নেশাপানি করে থাকে মাদকসেবীরা। সেখানে পড়ে থাকতে দেখা যায় ফেন্সিডিলসহ অন্যান্য নেশার কাজে ব্যবহৃত উপকরণ। সেটি সংগঠনের তরুণ-তরুণী সদস্যরা দা, কাস্তে, কোদাল, শাবল দিয়ে পরিষ্কার করেন। পরে সেখানে একটি সচেতনতামূলক ব্যানার লাগিয়ে দেন।
    সংগঠনটির নতুন প্রজন্মের সদস্য কংকনা রায়, আমিনুল ইসলাম ও রাব্বী হাসান বলেন, আমাদের বর্তমান প্রজন্ম জানেই না ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের পূর্বপ্রান্তে ছোট যমুনা নদীর পশ্চিম তীরে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটি কি বা কিসের জন্য নির্মিত। সেখানে ছিল না কেনো সাইনবোর্ডও। আমরা করব জয় সমাজকল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে অংশ নিয়ে এর ইতিহাস সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। আমাদের সকলের উচিৎ যারা দেশের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন তাদের স্মৃতিগুলো রক্ষণাবেক্ষণসহ এর পবিত্রতা বজায় রাখা। 
.


    সংগঠনটির সহসভাপতি পলাশ দাস বাপ্পী ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, ভাবনা থেকে হোক ভালো কাজ শীর্ষক স্লোগাকে সামনে রেখে আমরা বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কর্মকা- চালিয়ে আসছি। তারই ধারাবাহিকতায় যারা এ দেশের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন তাদের সম্মাননার্থে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। .


    ফুলবাড়ী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. এছার উদ্দিন বলেন, ৪ ডিসেম্বর ফুলবাড়ী পাক হানাদার মুক্ত দিবস। প্রতিবছর দিবসটি পালন করা হলেও এবছর কিছু কারণে দিবসটি পালন করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু সামাজিক ও মানবিক সংগঠন আমরা করব জয় সমাজকল্যাণ সংস্থার সদস্যরা উদ্যোগ নিয়ে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর শহীদ সদস্যদের সম্মানার্থে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটিতে তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন অভিযান চালিয়েছে। যা অবেলায় পড়ে থাকা জঙ্গলে পরিণত হয়েছিল। আমি সংগঠনটির সদস্যদের সাধুবাদ জানাই তাদের এই মহতী উদ্যোগের জন্য। তারা সবসময় সমাজের ভালো কাজগুলো করে যাচ্ছে। .


    তিনি ৭১’র স্মৃতি বর্ণনা করে বলেন, ৪ ডিসেম্বর বিকালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা ফুলবাড়ী ছেড়ে পালিয়ে যায়। তারা কিছু মাইন পুতে রেখেছিল। সেই মাইনে বিস্ফোরিত হয়ে ক্যাপ্টেন অশোক কুমার ক্ষেরসহ ৩ জন ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্য শহীদ হন। ভারতীয় মিত্রবাহিনীর ওই শহীদ তিনজনকে শেষকৃত্য সম্পন্নের পর ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের পূর্বপ্রান্তে ছোট যমুনা নদীর পশ্চিম তীরে তাদের সম্মানার্থে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছিল। সেটি বর্তমানেও আছে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেটি অবহেলা-অযতেœ পড়ে থাকে। এটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করতে সরকারের কাছে দাবি জানাই।. .

ডে-নাইট-নিউজ /

অন্যান্য বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ