.
.
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার চরকাদিরা, হাজিরহাট, চরফলকন, পাটারিরহাট, চরকালকিনি, চরমার্টিন, সাহেবেরহাট ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এসব অপরাধ কর্মকাণ্ড চলছে। গত এক বছরে একের পর এক ধর্ষণ, চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এমনকি বসতবাড়ির পানির কল, মোটর, শাড়ি, কাপড়—কোনো কিছুই রেহাই পাচ্ছে না চোরের হাত থেকে।.
.
উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ৮১টি ওয়ার্ডে কিশোরগ্যাংয়ের আধিপত্য দিন দিন বাড়ছে। তারা সংঘবদ্ধভাবে রাতে বসতবাড়িতে হানা দিচ্ছে, গরু চুরি করছে এবং সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। থানায় অভিযোগ করলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অপরাধীরা রয়ে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।.
এদিকে থানায় দালালচক্রের দৌরাত্ম্য নিয়েও উঠেছে অভিযোগ। সন্ধ্যা নামলেই সালিশ-বাণিজ্য শুরু হয় বলে জানায় স্থানীয়রা। পুলিশের ছত্রছায়ায় কয়েকটি দালাল গ্রুপ এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।.
গত এক বছরে সংঘটিত কয়েকটি আলোচিত ঘটনার মধ্যে রয়েছে—.
২৯ অক্টোবর: তোরাবগঞ্জে এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার।.
১১ অক্টোবর: চরবসু এলাকায় ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করেন বশির সর্দার নামে এক ব্যক্তি।.
৯ ডিসেম্বর (২০২৪): চরবটতলীতে মাকে বেঁধে তরুণীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ।.
১৫ অক্টোবর: চরমার্টিন ইউনিয়নে খালা-শাশুড়ীর সাথে ধর্ষণের ঘটনা।.
২৯ অক্টোবর: আবুধাবি প্রবাসীর বাড়িতে ১৬ লাখ টাকা ও ১৪ ভরি স্বর্ণ লুট।.
২৫ ফেব্রুয়ারি: চরফলকনে পরিবারের ১২ জনকে অচেতন করে ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট।.
২ এপ্রিল: চরলরেন্স ইউনিয়নের বাঁশতলায় দুর্ধর্ষ চুরি।.
১৯ ডিসেম্বর: হাজিরহাটে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট।.
১৭ অক্টোবর: হাজিরহাটের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ লাখ টাকা ও ৮ ভরি স্বর্ণ লুট।.
ইউপি সদস্য ইয়াসিন আরাফাতের ও ডা. ওলি উদ্দীনের বাসায়ও চুরির ঘটনা ঘটে।.
স্থানীয় জয়নাল আবেদীন বলেন,.
“যেভাবে চুরি-ডাকাতি ও ধর্ষণ বেড়ে গেছে, তাতে মনে হয় কমলনগরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নেই।”.
চরমার্টিনের খবিরুল হক জানান,.
“মানুষের নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই। থানায় জানালেও কোনো লাভ হয় না।”.
একজন ইউপি চেয়ারম্যান বলেন,.
“গ্রাম পুলিশ দিয়ে পাহারা দিলেও চুরি-ডাকাতি থামানো যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে হবে।”.
ইউপি সদস্য ইয়াসিন আরাফাত ও ডাক্তার ওলি উদ্দীন মাসুদও একই অভিযোগ করেন—পুলিশকে জানানোর পরও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।.
কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন,“কিছু চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। বেশ কয়েকজন অপরাধীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি অপরাধীদের ধরতেও অভিযান চলছে।”.
সব মিলিয়ে—চুরি, ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় কমলনগরের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ বিরাজ করছে এলাকাবাসীর মধ্যে।. .
ডে-নাইট-নিউজ /
আপনার মতামত লিখুন: