কক্সবাজার কারা হাসপাতালে রমরমা বেড বানিজ্য
ডে-নাইট-নিউজ ;
প্রকাশিত: বুধবার, ০৭ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৮:৪৭ পিএম;
কক্সবাজার কারা হাসপাতালে রমরমা বেড বানিজ্য
কক্সবাজার জেলা কারাগারে টাকা খরচ করলে সবকিছুই পাওয়া যায় কারা অভ্যান্তরে। শুধু খরচটা বাইরের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি। কারাবন্দিদের দাবি, টাকা থাকলে কারাগারে রাজকীয়ভাবে বসবাস করা সম্ভব। ভালো খাবার থেকে শুরু করে সবই পাওয়া যায় কারাগারে। বন্দিদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের দায়িত্বে রয়েছে কারা কর্তৃপক্ষের অনুগত কারা হাসপাতালের সহকারী মিজানুর রহমান।
কক্সবাজার কারা হাসপাতালে সুস্থ হাজতি আসামি প্রতিমাসে বেড প্রতি ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে থাকছে হাজতিরা। এসব টাকা বন্টন হয় কারা কর্মকর্তাদের মাঝে। এসবের দায়িত্বে আছেন কারারক্ষী মিজানুর রহমান। তবে এসব অভিযোগ স্বীকার করে মিজানুর রহমান বলেন, কারাবন্দীর স্বজনদের কাছ থেকে টাকা আমার মাধ্যমে নিই সত্যি, তবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অজান্তে কিছু হয়না।
কারা হাসপাতালের সহকারী মিজানুর রহমানই হচ্ছে কারা হাসপাতালের সিট বন্টনকারি, প্রথম দিন কারাগারে গেলে তাদের রাখা হয় আমদানি সেলে। পরে প্রয়োজনীয় অর্থ দিলে পাওয়া যায় হাসপাতাল কিংবা তুলনামূলক ভালো ওয়ার্ডে থাকার সুবিধা। স্বজনদের সাথে মোবাইল কথা বলার জন্য বখশিসের নামে ৫০ থেকে ১০০ টাকা এমনকি এক প্যাকেট বেনসন সিগারেটও আদায়ের অভিযোগ রয়েছে কর্তৃপক্ষের নিয়োজিত মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকার চুক্তিতে সুস্থ্য বন্দিদের অসুস্থ সাজিয়ে রাখা হয় তুলনামূলক আরামদায়ক জায়গা কারা হাসপাতালে।
গত শুক্রবার ২ মে বিকাল তিনটার দিকে কারাগারে থাকা হাজতির নাম বলে স্ত্রীর মুঠোফোনে ফোন দিয়ে টাকার কথা বলে কারা হাসপাতাল সহকারী মিজান। আর এই দৃশ্য ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে মিজানুর রহমান তার ব্যক্তিগত নাম্বার থেকে কারাবন্দী আব্দুর রশিদের স্ত্রী শামীমার মুঠোফোনে বলেন, যত তাড়াতাড়ি পারেন টাকা পাঠান ১৫ হাজার। কথোপকথনে মিজান বলেন, আগামী কাল টাকা দিতে বিলম্ব করিলে হাসপাতালের বেড থেকে বের করে দেয়া হবে। যদি আজকে দিতে পারেন তবে ভালো হবে, চেষ্টা করে দেখেন, অনান্য লোকের কাছ থেকে ১৫ হাজারের বেশি নিয়েছি, কারাবন্দীকে আঙ্কেল সম্বোধন করে আংকেলর দিকে তাকিয়ে আপনাকে ১০ হাজারের কথা বলছি। অডিও রেকর্ডে আরো শুনা যায়, আমি যে টাকার কথা বলেছি কাউকে বলবেন না, এরি ধারাবাহিকতায় (রবিবার ৪ মে) বিকাল ৬ :১০ মিনিটের সময় কক্সবাজার কারাগারের প্রথম গেইটের সামনে থেকে আব্দুর রশিদ কারাবন্দীর স্ত্রীর কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা বুঝে নেই মিজানুর রহমান। এসময় টাকা গুনে নেওয়ার অনুরোধ জানান উক্ত কারাবন্দির শামিমা আক্তার। তখন মিজানুর রহমান হেসে বলেন, এই খানে সম্ভব না, এই কথা বলতে বলতে ইজিবাইকে উঠার উদ্দেশ্য এগিয়ে যান। আর এই দৃশ্য প্রতিবেদকের মোবাইলে ভিডিও ধারণ হয়।
অভিযোগের বিষয়ে মিজানুর রহমানকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে, কক্সবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সামনে হোটেল ফ্রাইডেতে প্রতিবেদককে আসতে বলেন, ওই হোটেলে মিজানুর রহমান প্রতিবেদককে বসে আনার চেষ্টা করে। পরিশেষে তিনি বলেন কারা হাসপাতালের এসব আমার মত চুনোপুঁটির দ্বারা এককভাবে কিছু হয় না এসব বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবগত আছেন।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার জাবেদ মেহেদীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে মেসেজ করে পাঠিয়ে দিন তার বিরুদ্ধে
.
ডে-নাইট-নিউজ /
অপরাধ বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ
আপনার মতামত লিখুন: