• ঢাকা
  • সোমবার, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ১৬ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

জাতীয় ঐক্যের পথে বাংলাদেশ: তারেক-ইউনূস সমঝোতা


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:৩৭ পিএম;
জাতীয় ঐক্যের পথে,  বাংলাদেশ,  তারেক-ইউনূস সমঝোতা
জাতীয় ঐক্যের পথে বাংলাদেশ: তারেক-ইউনূস সমঝোতা

নতুন একটি আলোচনার শুরু: বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় “জাতীয় ঐক্য” শব্দটি যতবার উচ্চারিত হয়েছে, ততবারই তা বিভাজনের দেয়ালে আঘাত হেনেছে। তবে সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে সমঝোতা বা সংলাপ নতুন করে জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।.

প্রশ্ন হচ্ছে—এই সমঝোতা কি কেবল রাজনৈতিক সুবিধাবাদের কৌশল, না কি জাতীয় জীবনে এক নতুন দিকচিহ্নের সূচনা?.

 .

 .

প্রেক্ষাপট: দুই ভিন্ন প্রান্ত, এক লক্ষ্য?
তারেক রহমান রাজনৈতিকভাবে বহুল আলোচিত এবং সমালোচিত। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও, দলীয় রাজনীতির নেতৃত্ব তিনিই দিচ্ছেন। অন্যদিকে, ড. ইউনূস হলেন মাইক্রোক্রেডিটের জনক, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী, যার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি, কিন্তু দেশের অভ্যন্তরে নানা মামলা ও প্রশাসনিক চাপের মধ্যে ছিলেন পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে।.

এই দুই ভিন্ন পরিমণ্ডলের ব্যক্তিত্বের মধ্যে সদ্য ঘটে যাওয়া সংলাপ বা সমঝোতা (বিশেষ করে লন্ডনে বৈঠক ও মধ্যস্থতাকারীদের সক্রিয়তা)—এটি নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক গুরুত্ব বহন করে।.

 .

 .

সম্ভাব্য রূপরেখা: সমঝোতার চরিত্র কী?
পত্রিকান্তরে ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত অনুযায়ী, এই আলোচনার মধ্যে থাকতে পারে—.

✅ নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিতের চুক্তি
✅ আন্তর্জাতিক মহলে যৌথ লবিংয়ের পরিকল্পনা
✅ সুশীল সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণে একটি ‘ন্যাশনাল কনসেনসাস’
✅ সামাজিক ব্যবসা ও অর্থনৈতিক সংস্কারে নতুন মডেল গ্রহণের প্রস্তাবনা
✅ রাজনীতিতে উদার ও তরুণ নেতৃত্বের জন্য জায়গা তৈরি.

এই প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে যদি নীতিভিত্তিক চুক্তি হয় এবং তা সুশৃঙ্খল রূপে বাস্তবায়িত হয়, তবে তা নিঃসন্দেহে বৃহৎ পরিসরে রাজনৈতিক সংস্কারের পথ দেখাতে পারে।.

 .

 .

সমালোচনা ও দ্বিধা: বাস্তবতাকে অস্বীকার নয়;
এতদূর পড়ে পাঠকের মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে—এই সমঝোতা কি বাস্তবসম্মত? এটি কি কেবল ক্ষমতার খেলায় কৌশল পরিবর্তনের নামান্তর? অথবা আন্তর্জাতিক চাপ সামলানোর পথ?.

এমন সংশয় অমূলক নয়। বিশেষ করে যখন সমঝোতার প্রেক্ষাপটে জড়িত দুই পক্ষের অতীত ভূমিকা বিবেচনায় নেওয়া হয়। তদুপরি, অন্যান্য দলের অংশগ্রহণ বা প্রতিক্রিয়া ছাড়াই এই আলোচনা কতটা কার্যকর, তা নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট দ্বিধা।.

 .

জাতীয় ঐক্য: শুধু বার্তার নয়, কাঠামোর প্রশ্ন:
জাতীয় ঐক্য কেবল বার্তা নয়, এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো। একে সফল করতে হলে প্রয়োজন—.

১) রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক সংলাপ
২) মধ্যমপন্থী বুদ্ধিজীবী ও নাগরিক সমাজের সক্রিয়তা
তরুণ নেতৃত্বের আত্মপ্রকাশ
৩) সংবিধানসম্মত সমঝোতার ভিত্তি.

ড. ইউনূসের গ্রহণযোগ্যতা এবং তারেক রহমানের রাজনৈতিক অবস্থান যদি একটি সাধারণ সূত্রে বাঁধা যায়, তবে তার একমাত্র অর্থ হতে পারে—একটি নতুন জাতীয় রাজনৈতিক চুক্তি।.

শেষ কথা: বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ কঠিন এক সন্ধিক্ষণে। এখানে প্রয়োজন সহিষ্ণুতা, আলোচনার সংস্কৃতি এবং সর্বস্তরের অংশগ্রহণে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া। তারেক-ইউনূস সমঝোতা যদি এই লক্ষ্য পূরণের সূচনা হয়—তবে সেটি নিছক একটি রাজনৈতিক পাঁয়তারা নয়, বরং হতে পারে জাতির ভবিষ্যতের পথরেখা।.

তবে এটি যেনো ক্ষমতার ভাগাভাগি নয়, হয় মূল্যবোধ ও ভবিষ্যতের চুক্তি। সময়ই বলে দেবে এই সমঝোতা কতটা প্রাসঙ্গিক, কতটা দীর্ঘস্থায়ী।.

লেখাটির মাধ্যমে পাঠকদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিকল্প তুলে ধরার প্রয়াস। জাতীয় ঐক্যের প্রস্তাব যদি অন্তঃসারশূন্য না হয়ে জনগণের কল্যাণে নিবেদিত হয়, তবে তাতে ভবিষ্যতের ইতিহাস রচিত হতে পারে।.

✍️ লেখক: শফিউল বারী রাসেল (সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক), মুঠোফোন নম্বর: ০১৯১১১৫৫২৬৯. .

ডে-নাইট-নিউজ /

সম্পাদকীয় বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ