• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

এ যন্ত্রণার শেষ কবে,কি ভাবে?


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: শনিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, ১২:০৩ পিএম;
এ যন্ত্রণার শেষ কবে,কি ভাবে?
এ যন্ত্রণার শেষ কবে,কি ভাবে?

এ যন্ত্রণার শেষ কবে,কি ভাবে?
মিজানুর রহমান মিজান

   .

 ইদানিং একটি বিষয় দারুণ ভাবে আমাকে আন্দোলিত করে, হাসায়, কাঁদায়।তা হচ্ছে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের জন্ম নিবন্ধন, আইডি কার্ড, স্কুল সার্টিফিকেট নিয়ে বিভিন্ন ভাবে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।সুতরাং এক্ষেত্রে দু’একটি ঘটনার উদ্ধৃতি দিলেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে পাঠকের নিকটে।একজন ছাত্র তার জন্ম নিবন্ধন ও পিএসসি পরিক্ষার সার্টিফিকেটে আব্দুল কাদির নামে রয়েছে।এই সার্টিফিকেট ও জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ক্লাস সিক্সে ভর্তি হয়।কিন্তু দেখা যায় অষ্টম শ্রেণীতে পরিক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে আবু তালেব আব্দুল কাদির নামে।চলছে পরবর্তী লেখাপড়ার ধাপ।তথা নবম শ্রেণীতে রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে অষ্টম শ্রেণীর অনুরুপ।যখন এ বিষয়টি ধরা পড়ে।তখন অভিভাবক সরণাপন্ন হন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের।এতো গরমিল নামের ক্ষেত্রে হয় কি ভাবে তা জানতে?প্রধান শিক্ষকের জবাব,এটা আমাদের দেখার বিষয় নয়?ছাত্রছাত্রীরা যে ভাবে লিখেছে, সেভাবেই হয়েছে?.


  পাঠক দেখুন শিক্ষকের কি কান্ডজ্ঞানহীন, দায়িত্বহীনতার সুস্পষ্ট সুকৌশলী কথাবার্তা।আপনাদের নিকট আমার প্রশ্ন শিক্ষকের জবাব কি সঠিক?আমি যখন তিনিকে বললাম যে, ছাত্রছাত্রীরা ভুল করতেই পারে, করা অসম্ভব কিছু নয়?কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের ভুল সংশোধন করার দায়িত্ব ও কর্তব্য শিক্ষকের।সে জন্য তাকে স্কুলে পাঠানো।এতো হল তিনির জবাবের জবাব।কিন্তু আমি যখন সুন্দর, সুস্পষ্ট ভাবে সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে দেখিয়ে দিলাম, যে তার জন্ম নিবন্ধন কার্ডে ও পিএসসি সার্টিফিকেটে নাম রয়েছে আব্দুল কাদির।সার্টিফিকেট অনুসারে তো তার পরবর্তী সকল কাজ হবে।তবে পরিবর্তন এলো কোত্থেকে, কেমন করে?তারপরও তিনি জবাব দেন, ছাত্রছাত্রীরা যে ভাবে দেয়, দিচ্ছে আমি চেক করে করে তা করেছি।আমি তখন বললাম যে, আপনি যে জবাব দিচ্ছেন তার মর্মার্থ হল একজন ছাত্র এসে বলল, তাকে সিক্সে ভর্তি করতে কোন কাগজ পত্র, সার্টিফিকেট ছাড়া।আপনি কি তাকে ভর্তি করে নেবেন? তখন শুরু হয় ইতস্ততা, মিন মিন।তিনি কোন ভাবেই ভুল স্বীকার করতে, নিজের ভুলের দায়ভার নিতে রাজি নন।এ হল আমাদের স্বভাব, চরিত্র।সর্বশেষ আমাকে বলা হচ্ছে, আপনি যে ভাবে বলবেন বা করবেন আমার সহযোগিতা থাকবে।আমাদের মতো মানুষের সহিত যদি হয় এ ধরণের আচরণ?সাধারণ জনগণের ক্ষেত্রে কি হচ্ছে তা ভেবে কুল কিনারা বিহীন?এখানে প্রশ্ন থেকে যায়, যাওয়া স্বাভাবিক।ক্লাস সিক্সে ছাত্র ভর্তি হতে সার্টিফিকেট লাগে।সার্টিফিকেট বিহীন কোন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হবার কোন প্রকার সুযোগ নেই।ক্লাস সিক্সের সার্টিফিকেট অনুসরণ করেই সকল ছাত্রছাত্রীদের নাম তালিকা বা অপরাপর সার্টিফিকেট এ নাম থাকবে।যা হবার কথা সঙ্গত কারনেই।কিন্তু সেক্ষেত্রে হয়েছে উল্টো বা বিপরীত।মুল নাম পড়ে যাচ্ছে ঢাকা।এখন কি করা অভিভাবক এ বিষয়ে করণীয় পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।এক্ষেত্রে কি পরিমাণ দৌড়াদৌড়ি, পরিশ্রম, অর্থ, সময় ব্যয়িত হচ্ছে, হবে প্রত্যেকেই সহজে অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন বলে আমার ধারণা।আর গরিব ও অসহায়ের কি অবস্থা একটি বার দয়া করে ভাবুন?.


     এ তো গেল একটি উদাহরণ। অপরদিকে শিশুকে টিকা প্রদানকারী কর্মিরা যার যে ভাবে ইচ্ছে, সে ভাবে কার্ডে নাম লিখে দিচ্ছেন। শিশুর পুরো নাম লিখতে অনেকে অনিচ্ছুক।যেমন মো: আব্দুল কাদির।এক্ষেত্রে লিখা হচ্ছে শুধু কাদির।চলছে শুধু সংক্ষিপ্তকরণ।দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধের প্রতি অনেকের উদাসীনতা।অফিসে বা স্কুলে এসে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন যে নৈতিকতার সহিত সম্পৃক্ততা , তা মোটেই খেয়াল নেই।আছে মনে প্রাণে অন্ত:করণে অফিস না করেই (সব নয়)যদি সময়টি করা যায় বসে বসে ব্যয়িত এবং মাস শেষে বেতনটা পেলেই হল।আগেকার দিনে মানুষ ভাবত কাজ কর্মে, “আমি কি পরিমাণ কাজ করলাম এবং কি পরিমাণ টাকা আমার কাজের অনুপাতে প্রাপ্য।সেদিকটি আমি দেখেছি অনেক বয়স্ক লোকের দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধের সচেতনতা।          আবার ছইফ উদ্দিনের নামের ক্ষেত্রে লিখা হচ্ছে ছইফ আলী ইত্যাদি।তাহলে সার্টিফিকেট নিয়ে ভর্তি করার নিয়ম কি পালিত হচ্ছে?যার যে ভাবে খুশি জবাব দায়সারা গোছের দিয়েই ক্ষান্ত হতে হয়। সময়কে প্রাধান্য দিয়ে জলদি সমাপ্তকরণ কাজ।পুরো নাম লিখার সময় নেই।আবার আমাদের দেশে অনেকের কাগজে কলমে এক নাম।প্রচলিত রয়েছে আরেক নাম।যাকে বলা হয় ডাক নাম।অনেক শিশুর ডাক নাম লিখা হয়েছে।লিখিত নাম লিখা হয়নি।স্কুল কলেজে নাম থেকে যাচ্ছে একটির পরিবর্তে আরেকটি।বাড়ছে ঝামেলা,ভোগান্তি।.


     অনেক অভিভাবকের ক্ষেত্রেও হয়েছে, রয়েছে নানাবিধ সমষ্যা।অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকের ও দায়বদ্ধতার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। স্কুলে অভিভাবককে ডেকেও একদিন নেয়া যাবে না।অভিভাবকের গাফিলতি ও একেবারে শুন্যের কোটায় নয় কোন ক্রমেই।বলছিলাম আইডি কার্ডের কথা।ব্যক্তির নাম কুদ্দুছ মিয়া। কিন্তু লিখা হয়েছে আব্দুল কুদ্দুছ।বিষয়টি কি একেবারে সহজবোধ্য?কি হতে কি হয়ে গেল? অনেক সময় দেখা যায় লিখা সঠিক হয়েছে। কিন্তু কার্ড হাতে প্রাপ্তির পর দেখা গেল ভুলের ছড়াছড়ি।অনেকে লেখাপড়া জানা।স্বাক্ষর প্রদানের ক্ষেত্রে তার নেয়া হচ্ছে টিপসহি।এখানে আপনারা হয়তো একটু ফাঁক পেয়ে যাচ্ছেন, তাই না?না, না আমি সে সুযোগ দিচ্ছি না।কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের দেশে প্রচলিত রয়েছে স্বাক্ষরের সহিত টিপসহি ও প্রযোজ্য।যেমন সাবরেজিস্টারী অফিসের কথা। সেখানে উভয়টিই আবশ্যিক।এ ধরণের ক্ষেত্রের কথা বাদ দিয়েই বলছি।অনেক ক্ষেত্রে আছে স্বাক্ষর প্রদান করলেই হয়। কিন্তু দেখা যায় স্বাক্ষর দিতে সময় লাগবে বিবেচনায় এনে অনেক শিক্ষিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে টিপসহি প্রদান করতে।তখনই বাঁধে গোলমাল, ঝামেলা।ব্যক্তি স্বাক্ষর ছাড়া টিপসহি দিতে রাজি নয়। তখন কিন্তু ঐ ব্যক্তিকে স্বাক্ষর প্রদানের অনুমতি দেন, না দিয়ে হয় না।অন্তহীন সমষ্যায় জর্জরিত।.


     আরেকটি বর্তমানে যোগ হয়েছে সমষ্যা হিসেবে।একজন অভিভাবক বা বয়স্ক ব্যক্তির আইডি কার্ড রয়েছে।অনেকে সার্টিফিকেট ও আইডি কার্ডে মিল রয়েছে।কিন্তু জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল করা নয়।বলা হচ্ছে জন্মনিবন্ধন ডিজিটেল করে নিতে হবে। এখন তা করতে গেলে দাদা-দাদী, নানা-নানীর নামধাম ও লাগছে। এ বিষয়ে নানামুখী ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।বিষয়টি সহজ সাধ্য নয় কোন ক্রমেই।এ বিষয়টি এডিয়ে যাওয়া যায় কি না? সচেতন মহলের বিবেচ্য ব্যাপার।সর্বোপরি ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে গেলে দেখা যায় নানা শ্রেণীর পেশা, বয়স্কের ভীড। কেহ কেহ ৭/৮ দিন যাতায়াত করেও সুরাহা পাচ্ছেন না। কর্মকর্তাগণ ও হিমশীম খাচ্ছেন।লাইন হয় প্রতিদিন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর।অনেক সময় কর্মকর্তাগণকে কাজ করতে দিচ্ছেন না জনসাধারণ।কার আঘে কে কাজ করবেন, করাতে পারবেন। প্রতিযোগিতা।সর্বশেষ আমার কথা হল কাউকে দোষারোপ না করে ব্যাপারটির গুরুত্ব অনুধাবন পূর্বক যতটুকু সম্ভব সহজ সমাধানের ব্যবস্থা করে দিতে বা উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টমহলের প্রতি আকুল আবেদন রইল। .


লেখক মিজানুর রহমান মিজান,প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক চাঁন মিয়া স্মৃতি পাঠাগার,রাজাগঞ্জ বাজার , বিশ্বনাথ, সিলেট।    
 . .

ডে-নাইট-নিউজ /

সম্পাদকীয় বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ