
চারপাশে গণ কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডা। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পুরো দেশ। মাঘের শুরুতে শীতের তীব্রতা এবছরে সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। হিমশীতল ঠান্ডা উপেক্ষা করে বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার হাওর ও নিম্নাঞ্চল এলাকার কৃষকেরা। ভয়ংকর ঠান্ডায় হাড় কাঁপছে চাষীদের।.
রোপা বোরো ধানের কচি চারায় ফসলের মাঠ যেন সবুজ গালিচায় আবৃত। শীতের সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হররোজ উপজেলার বোরো আবাদী জমিগুলো ট্রাক্টর ও গরু দিয়ে চাষ করে যাচ্ছেন কৃষকেরা। অনেক কৃষকই বোরো ধানের চারা রোপনে ব্যস্থ রয়েছেন। অনেকেই আগাম বোরো জাতের আবাদ ইতিমধ্যে শেষ ও করেছেন।.
জীবন যাপনের চাহিদা মেঠাতে শরীরে হালকা শীতের পোশাক,মাথায় গরম কাপড় লাগিয়ে কাজের মধ্যে রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। আনন্দ যেন কোন অংশে কম নেই তাদের। শীতল পানি, কাঁদামাটির হাঁড় কাঁপানো ঠান্ডা আর কষ্টকে পিছনে ফেলে অনেক চাষীরা বীজতলা থেকে চারা সংগ্রহ করে সেই চারা আবার জমিতে রোপন করছেন। অনেকে কোদাল দিয়ে করছেন জমির সীমানা নির্মাণ। কেউবা আবার জমির আগাছা পরিষ্কারে ব্যাস্ত। জমিতে জৈব সার ছিটানোসহ তৈরি জমিতে পাম্পের মাধ্যমে পানি সেচ দিয়ে তা ভিজিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন । শ্রমিক সংকট থাকায় বোরো চারা রোপনে কৃষকদের সাহায্য করছেন তাদের পরিবারের ছোট বড় অন্যান্য সদস্যরা।.
সরেজমিনে উপজলার অনেক কৃষকের সাথে কথা হলে তারা জানিয়েছেন, আমন মৌসুমে ধানের ভালো ফলন ও দাম বেশি হওয়ায় তারা এবার বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বোরো চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছেন। পাশাপাশি তারা আরো বলেছেন। বর্তমানের ন্যায় শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে তাঁরা আশাবাদী। তবে অনেক কৃষক আছেন শংকায়। ফাল্গুন চৈত্র মাসে মাঝে মধ্যে বৃষ্টি না হলে পানির অভাবে জমি ফেটে চৌচির হতে পারে। যার ফলে ভালো ফলন হওয়াটা অনেকটা প্রকৃতির উপর নির্ভর করছে। সর্বোপরি এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য এখন উপজেলার সর্ববৃহৎ চাউলধনী হাওর,মাখর গাঁও, নোয়াগাঁও,বন্ধুয়াসহ,ছোট বড় সব হাওরে দেখা যাচ্ছে।.
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৭২৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে এবং বোরা ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭২১০০মেট্রিক টন। প্রণোদনা হিসেবে কৃষকদের মাঝে প্রয়োজনীয় বীজ,সার বিতরণ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকলে এবার গোটা উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে এমটি জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায়।.
ডে-নাইট-নিউজ / মো. সায়েস্তা মিয়া:
আপনার মতামত লিখুন: