• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১৪ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

১শ ২২ বছরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই নতুন ভবন: জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: বুধবার, ০৪ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:৫৯ পিএম;
১শ ২২ বছরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই নতুন ভবন: জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান
১শ ২২ বছরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই নতুন ভবন: জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের চন্দগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝরাঝির্ণ টিনসেডের গৃহে চলছে কোমলমতি শিক্ষারর্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। ৭১ শতাংশ ভুমির উপর নির্মিত বিদ্যালয়টি ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত কোন বড় পাকা বিল্ডিং পায়নি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকদের পক্ষে একাধিকবার ভবন নির্মাণের জন্য আবেদন করেও কর্তৃপক্ষের ঠনক নড়ানো যায়নি। ১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি করণ করা হয়। প্রাচীন এই বিদ্যালয়ে একসময় কয়েক শতাধিক ছাত্র/ছাত্রীর উপস্থিতি ছিল। এখন এর পরিধি ছোট করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী একাধিক প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র/ছাত্রী সংখ্যা কমে এসেছে এখন। বর্তমানে বিদ্যালয়ের আওতাধিন প্রয়াগমহল, কাবিলপুর, চন্দগ্রাম ও চন্ডিপুর গ্রামের শিশুরাসহ বহিরাগত মিলিয়ে ২২০জন ছাত্র/ছাত্রী পড়ালেখা করছে। তার মধ্যে ১০৫ জন ছাত্র এবং ১১৫ জন কোমলমতি ছাত্রী শিক্ষার্থী রয়েছে। অনুমোদিত শিক্ষক পদ সংখ্যা মোট ৮ টি থাকলে ও ৭ জন রয়েছেন কর্মরত। ৭ জনই নারী শিক্ষক। এ স্কুলে কোনো পুরুষ শিক্ষক নেই। ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্বে আছেন সৎপুর কামিল (এম.এ)মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা শফিকুর রহমান।.

 ১ টি কর্মপদ শুন্য রয়েছে বলে বিদ্যালয় তথ্যসুত্রে জানা গেছে।.

২২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক রয়েছেন ৭ জন এবং দপ্তরি একজন। টিনসেড ভবন রয়েছে পুরাতন জরাজীর্ণ একটি এবং ছোট অফিস কক্ষ ও পঞ্চম শ্রেনির শ্রেনী কক্ষসহ একটি। মোট ছয়টি কক্ষ রয়েছে এ বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ে একটি কক্ষে প্রাক প্রাথমিক পর্যায়ে ক্লাস চলে। দুই শিফটের প্রথমে প্রাক প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেনির ক্লাস দুপুর ১২টা এবং তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেনির ক্লাস সোয়া ৪টা পর্যন্ত চলে। ৬ নং একলিমিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ক্লাস্টারে আওতায় বিদ্যালয়ে একটি যৌথ টয়লেট ও একটি নলকূপ রয়েছে। এগুলো দেখা শুনা করেন বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক।.

বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ১৯০১ সালে বিশ্বনাথ উপজেলার মদনপুর মৌজার জে.এল.নং ১৭, খতিয়ান নং ০৩, দাগ নং ২৮১৯, ২৮২২, ৩৮৪৫ এ ৭১ শতক ভুমি চন্দ গ্রামের বিশিষ্ট আইনজীবী সুধীরন্দ্র নাথ চৌধুরী ও অভয়াচরন সেনাপতি দান করেন। বড় আকারের বিল্ডিং নির্মাণে জায়গা সংকুলান সক্রান্ত কোন অযুহাত তৈরির আপাদত সুযোগ নেই। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার পর্যাপ্ত মাঠ রয়েছে। বিদ্যালয়টি এ অঞ্চলে বহু জ্ঞানী গুণী মানুষ সৃষ্টি করেছে। এ অঞ্চলের অনেক নতুন বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ হলেও এ বিদ্যালয়ের প্রাচীন ভবনটি সংস্কার করে কোন মতে শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে শ্রেনি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।.

সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে বিদ্যালয়টির পাঠদান কক্ষগুলোর বেহাল দশা। আঁধা পাকা টিনসেড গৃহের দেওয়ালে ফাঁটল ও বারান্দার পাকা খুটিতে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটার আশংকায় রয়েছেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। টিনের ছাঁদ চুয়ে ভেতরে বৃষ্টি পড়ার কারণে পাঠদান হয় ব্যাহত। প্রায় ১৮ বছর আগে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি ১ তলা পাকা ঘর নির্মাণ করা হলে সেটি অফিস কক্ষ ও পঞ্চম শ্রেণীর কক্ষ হিসেবে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে। ৪ কক্ষ বিশিষ্ট টিন সেড ঘরকে বার-বার সংস্কার করে চলছে অদ্যবদি। স্বাধীনতার পরবর্তী দীর্ঘ সময় এবং সরকারি করণের ৫৩ বছর পরও কোন পাকা ভবন নির্মিত না হওয়ার এলাকাবাসীর মনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর দাবী এ ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ে আধুনিক ভবন নির্মাণ করে প্রাচীন ঐতিহ্যকে আধুনিকার সাথে রূপদান যেন করা হয়।.

নতুন ভবন নির্মাণের দাবী জানিয়ে প্রতিষ্ঠাতা ও ভুমিদাতা পরিবারে সদস্য প্রতাপ সেনাপতি জানান, আমরা একটি নতুন ভবনের জন্য অনেকবার সরকারি দপ্তরে যোগাযোগ করেছি কিন্তু কোন ফল পাইনি। এখানে একটি আধুনিক ভবন নির্মাণের দ্রুত ব্যবস্তা করতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করি।এছাড়া একটি পাকা ভবন নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন এলাকার বিশিষ্ট সাংবাদিক মুহিবুর রহমান খালেদ, সাংবাদিক মো. সায়েস্তা মিয়া ও শিক্ষানবিস আইনজীবী পলাশ সেনাপতি সহ এলাকার অনেকেই।.

বিদ্যালয়ের প্র্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন অনিমা রাণী দাস।তিনি জানান, ২০১৮ সালে ওই বিদ্যালয়ে যোগদানের পর একাধিকবার উপজেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে একটি ভবন নির্মানের আবেদন করেছি । ৮/১১/২০২০ সালে এবং ২১/০১/২০২১ সালে উপজেলা চেয়ারম্যানের সুপারিশ সহ আবেদন করি কিন্তু কোন সাড়া পাইনি। এখনও শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে বিভিন্ন দপ্তরে নিয়মিত যোগাযোগ করে যাচ্ছি। তবে আশা করছি ভবন নির্মাণের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ নজর দেবেন।.

এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চন্দগ্রাম বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত আবেদন আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে পাঠিয়েছি কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সাড়া মেলেনি।.

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনা আক্তার জানান, আমি নতুন এসেছি। আগের আবেদনের বিষয়টি কোন প্রক্রিয়ায় আছে জানা নেই। তবে নতুন করে কোন আবেদন পেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে পাঠাব। আমার সার্বিক সহযোগীতা থাকবে।  .

.

ডে-নাইট-নিউজ / মো. সায়েস্তা মিয়া

সারাদেশ বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ