
নাসির মাহমুদ ( লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি): লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় ৬৩৩টি খামারে থাকা ১ লাখ ৩০ হাজার ৯১৫টি গবাদি পশু নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় রয়েছেন খামারিরা। এসব গবাদি পশুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্বি ভাইরাস (LSD) বা পক্সভাইরাস নামে পরিচিত এক সংক্রামক রোগ। এদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় এ অঞ্চলের খামারিরাও রয়েছেন আতঙ্কে।.
.
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারিভাবে টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রাণিসম্পদ বিভাগের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তারা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ খামারিদের।.
.
পশু বিশেষজ্ঞদের মতে, লাম্বি ভাইরাস (LSD) গবাদি পশুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি ভাইরাস। এটি দ্রুত সংক্রমণ ঘটিয়ে গরুর দুধ উৎপাদন, প্রজনন ক্ষমতা ও শারীরিক শক্তি কমিয়ে দেয়। এ অবস্থায় যদি অ্যানথ্রাক্স রোগও ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে রামগতি ও কমলনগর অঞ্চলে থাকা ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি গবাদি পশু এবং সাধারণ মানুষও বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়বে।.
দুই উপজেলার গবাদি পশুর সংখ্যা.
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী:.
রামগতি উপজেলায়:.
মহিষ৮,০০০টি
মোট: ৯৯,১০৭টি গবাদি পশু.
কমলনগর উপজেলায়:.
দুই উপজেলায় মিলে গবাদি পশুর সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ৯১৫টি।.
রামগতির চরগাজী ইউনিয়নের ডেইরি ফার্ম মালিক মো. মিলন বলেন,.
“উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস শুধু নামেই আছে, কাজের সময় কাউকে পাওয়া যায় না। খামারিদের কোনো সহায়তা বা প্রয়োজনীয় ওষুধ সময়মতো দেয় না।”.
আনোয়ার ডেইরি ফার্মের মালিক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন,.
“অফিসে ফোন দিলেও কেউ ফোন ধরে না। খামারের কোনো খোঁজ নেয় না। গরু, ছাগল ও ভেড়াগুলো বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।”.
চরলক্ষ্মী গ্রামের খামারি গোলাম রব্বানী জানান,.
“আমার খামারের সব গরু লাম্বি ভাইরাসে আক্রান্ত। অফিসে ফোন দিলে তারা ফোন ধরেন না, খোঁজও নেন না।”.
কমলনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন ও রামগতি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুবেল সরকার বলেন,.
“দেশের বিভিন্ন স্থানে অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও আমাদের এলাকায় এখনো তেমন কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে কিছু খামারে লাম্বি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু গবাদি পশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে, পর্যায়ক্রমে সব খামারেই টিকা দেওয়া হবে।”.
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ শুরুর পর্যায়ে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ না নিলে এ অঞ্চলের গবাদি পশু খাতের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। পাশাপাশি মানুষে সংক্রমণ ঠেকাতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের সক্রিয় ভূমিকা এখন সময়ের দাবি।. .
ডে-নাইট-নিউজ /
আপনার মতামত লিখুন: