• ঢাকা
  • সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

ফুলবাড়ীতে বসেছে ২০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০২:১৩ পিএম;
ফুলবাড়ীতে বসেছে ২০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা
ফুলবাড়ীতে বসেছে ২০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা

ফুলবাড়ীতে বসেছে ২০০ বছরের পুরোনো
ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা
মেলায় ঘোড়া নিয়ে অংশ নিয়েছে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীরা
.


প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় বসেছে ২০০ বছরেরও বেশি সময়ের ঐতিহ্যবাহী বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলা। মেলাকে কেন্দ্রে করে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ঘোড়া নিয়ে এসেছেন ঘোড়া ব্যবসায়ীরা। তবে গতবছর প্রশাসন মেলা ভেঙে ফেলার কারণে এবছর মেলায় অংশ নেন’নি বহু ব্যবসায়ী। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ছাপা বের হয়। ঘোড়ার এ মেলায় বসেছে গ্রামীণ মেলাসহ বিভিন্ন খাওয়ার দোকান। ঐতিহ্যবাহী এ ঘোড়া মেলা এবছর সুষ্ঠভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় আনন্দিত ক্রেতা-বিক্রেতা, দর্শনার্থীসহ মেলার আয়োজকরা। এদিকে মেলা উপলক্ষে মেলায় আগত ঘোড়া ব্যবসায়ীদের ঘোড়ার অংশ গ্রহণে ঘোড়দৌঁড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ঘোড়দৌঁড় দেখতে বিভিন্নস্থান থেকে ছুঁটে আসেন নানা বয়সী দর্শনার্থী। .


    জানা যায়, প্রতি বছর বৈশাখ মাসের ৯ অথবা ১০ তারিখ থেকে ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের মেলাবাড়ী মাঠে এই ঐতিহ্যবাহী বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলা বসে। মেলাটি অন্তত ১৫ দিন স্থায়ী হয়। তবে স্থানীয়ভাবে গরু, মহিষ ও ছাগল তেমন বেচাকেনা না হলেও ঘোড়াই মূলত বেচাকেনা হয়ে থাকে। এ কারণে এটি বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলা নামেই দেশব্যাপী পরিচিত। .


আলাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রবীণ শিক্ষক দছিম উদ্দিন ম-ল বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলাটি দেশব্যাপী ব্যাপক পরিচিত। ঘোড়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলেই এই মেলা শুরু এবং শেষ হওয়ার তারিখ জানেন। এ কারণে প্রতিবছর মেলা শুরুর আগ থেকেই ঘোড়া বেচাকেনা করতে আসেন সংশ্লিষ্টরা। মেলাকে কেন্দ্র করে হরেক রকম দোকানপাট বসে মেলায়। বিনোদনের জন্য সার্কাস, দোলনাসহ নাগর দোলা আসে মেলায়। বছর বৈশাখ মাসে মেলাটি শুরু এবং শেষ হয়। .


জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার সুখনগরি থেকে ঘোড়া নিয়ে এ মেলায় এসেছেন ঘোড়া ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম, জহুরুল ইসলাম ও সামিউল ইসলাম। তারা বলেন, প্রায় ১৪ টি ঘোড়া নিয়ে বুড়া চিন্তামন ঘোড়া মেলাতে অংশ নিয়েছেন তারা। সারাবছর দেশের বিভিন্নস্থানে অনুষ্ঠিত ঘোড়ার মেলাতে ঘোড়া নিয়ে অংশ নেন তারা। ঘোড়া বিক্রি করেই জীবনজীবিকা নির্বাহ করেন তারা। .


তারা আরো বলেন, গতবছর প্রশাসন মেলা ভেঙে দেওয়ায় চলে গিয়েছিল। পরে আবার মেলা হয়েছে কিন্তু আর আসিনি সে মেলাতে। এবার ভালোভাবে খোঁজখবর নিয়ে মেলাতে এসেছি। ছোটবড় মিলিয়ে ১৪ টি ঘোড়া আছে সেগুলো সর্বনি¤œ ৭ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করব।
বিরামপুর উপজেলার ভগবতিপুর থেকে আসা ঘোড়া ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে এই ঘোড়ার মেলায় ঘোড়া বেচাকেনা করে আসছি। এবারও ৪টি ঘোড়া বিক্রি করতে মেলায় এসেছি। ঘোড়ার মধ্যে একটি রয়েছে সাদা রংগের ঘোড়া। সেটির নাম রাখা হয়েছে বিজলী। খুবই দুর্দান্ত ঘোড়া এটি। সবার নজর কাড়ছে ঘোড়াটি। গোড়াটির দাম রাখা হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু ক্রেতারা ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা দরদাম করছেন। ৫০ টাকার টাকার ওপরে হলেই ঘোড়াটি বিক্রি করে দেবো। গতবছর মেলায় এসে ক্ষতি হয়েছিল। আশা করছি এবার কোনোপ্রকার লোকসানের মুখে পড়তে হবে না। .


সাড়ে চার বছর বয়সের রেসিং ঘোড়া মেলায় এনেছিলেন রহমত আলী। এই ঘোড়াটিই এবারের মেলার সবচেয়ে বেশি দামি। সবার নজর শুধু ঘোড়াটির দিকে।  স্থানীয় বাসিন্দা খলিলুর রহমান ও সুলতান আলী বলেন, গতবার মেলা ভেঙে দেওয়ায় অনেকে মেলা হবে কি-না তা নিয়ে জটিলতা ভেবে মেলায় অংশগ্রহণ করেন’নি। এটি প্রায় ২০০ বছরেরও বেশি সময় পূর্বের এতিহ্যবাহী মেলা। এখানে দূরদূরান্ত থেকে ঘোড়া কেনা-বেচার লক্ষ্যে মানুষ আসেন। এবার মেলাটি সুষ্ঠুভাবে শুরু হয়েছে। 
    আলাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেলার আয়োজক কমিটির প্রধান নাজমুস সাকির বাবলু বলেন, মেলাটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে এলাকাবাসী অনেক শ্রম ও সময় দিয়ে থাকেন। গতবার একটু সমস্যার জন্য অনেকে কষ্ট পেয়েছেন। কিন্তু এবার সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে।
    থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, এটি এলাকার একটি ঐতিহ্যবাহী মেলা। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ঘোড়া ব্যবসায়ীরা এসেছেন। মেলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ নজর রাখছে।  
    ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মাদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন, খাস কালেকশন করা হয়েছে। মেলা উদ্বোধন করতে সার্বিক দায়িত্ব দেওয়া আছে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তৌশিলদারকে। মেলার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসন নজরদারি করছে।
 . .

ডে-নাইট-নিউজ /

সারাদেশ বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ