• ঢাকা
  • রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১২ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

প্রতিষ্ঠার ১৩ বছর পরও ঝিনাইদহ ম্যাট্স চলছে জোড়াতালি দিয়ে


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:২৯ পিএম;
প্রতিষ্ঠার ১৩ বছর পরও ঝিনাইদহ ম্যাট্স চলছে জোড়াতালি দিয়ে
প্রতিষ্ঠার ১৩ বছর পরও ঝিনাইদহ ম্যাট্স চলছে জোড়াতালি দিয়ে

আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ প্রতিষ্ঠার ১৩ বছরেও ঝিনাইদহ সরকারী মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাট্স) কর্মকর্তা কর্মচারীর পদ সৃজন হয়নি। মন্ত্রনালয়ে বহুবার চিঠি গেছে পদ সৃজনের জন্য, কিন্তু কাজ হয়নি। পদ সৃজনের ফাইলটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ শিক্ষা বিভাগে পড়ে আছে। স্কুলটিকে স্থায়ী কোন শিক্ষক বা কর্মকর্তা না থাকায় বাইরে থেকে খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়ে এসে জোড়াতালি দিয়ে ক্লাস করানো হচ্ছে। ফলে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরিপুর্নভাবে বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা লাভ করতে পারছে না। মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের সাবেক এক অধ্যক্ষ অভিযোগ করেন, ঘুষ প্রদান না করার কারণে পদ সৃজনের ফাইলটি ১৩ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। তিনি বলেন, এই টাকা কে দিবে ? তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০০১-২০০২ অর্থ বছরে ঝিনাইদহ শহরের অদুরে ১৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ঝিনাইদহ মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বৃহৎ এই ভবন পড়েই ছিল। পরে সেখানে র‌্যাব-৬ এর কোম্পানী কমান্ডারের অস্থায়ী অফিস স্থাপন করা হয়। এখনো মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের বেশির ভাগ ভবন র‌্যাব সদস্যরা ব্যবহার করছেন। ভবন তৈরীর ৯ বছর পর ২০১০ সালে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের কার্যক্রম শুরু হয়। ৫২ আসনের মধ্যে প্রথম বর্ষে মাত্র ১৬ ছাত্র নিয়ে যাত্রা করে ঝিনাইদহ মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল। .

 .

১৩ বছরে স্কুলটিতে ১৭ জন চিকিৎসক অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও তাদের পদ সৃজিত ছিল না। মন্ত্রনালয় থেকে সংযুক্তি হিসেবে তাদের পাঠানো হয়। স্টাফ প্যাটার্ন অনুযায়ী ঝিনাইদহ মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলে মোট পদের সংখ্যা ১০৪টি। কিন্তু পদ সৃজন না হওয়ায় ১৩ বছরেও পুর্নাঙ্গ ভাবে কর্মকর্তা কর্মচারী পায়নি সরকারী এই প্রতিষ্ঠানটি। ফলে জোড়াতালি দিয়ে চলছে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলটি। বর্তমান মন্ত্রনালয় থেকে অধ্যক্ষ হিসেবে ডাঃ আব্দুল মোমেন ও লেকচারার হিসেবে যশোর সদর উপজেলার মেডিকেল অফিসার তানজিনা নওশিন সংযুক্তি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাও তারা নিয়মিত অফিস করেন না। ফলে সরকারী এই প্রতিষ্ঠানটি অনেকটা আল্লাহ পাকের নামে চলছে। মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের খন্ডকালীন প্রধান সহকারী আকবর আলী জানান, এই প্রতিষ্ঠানে ছোটখাটো পদগুলো আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে চলছে। ১০জন কর্মচারী আউট সোর্সিংয়ে কর্মরত আছেন। পদ সৃজন হয়নি বলে স্থায়ী কোন লোকবল নেই। তিনিও মাত্র ১২ হাজার টাকায় খন্ডকালীন চাকরী করেন। পদ সৃজন না হবার পরও কেন বা কিভাবে সরকারী এই প্রতিষ্ঠানটা চলছে তা একমাত্র মন্ত্রনালয় ভালো জানে। তিনি আরো জানান, শিক্ষক না থাকায় বাইরে থেকে খন্ডকালীন শিক্ষক এনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হয়। খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে মামুন রেজা ও শরীফ মাহমুদ হাসান ক্লাস নিয়ে থাকেন। তাছাড়া প্যাথজলী বিভাগে রেজাউল ইসলাম ও মাসুদা জাহান শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিয়ে থাকেন। ঝিনাইদহ সরকারী মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের সাবেক অধ্যক্ষ ডাঃ মুন্সি মোঃ রেজা সেকেন্দার জানান, তিনি একাধিকবার প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পদ সৃজন নিয়ে মন্ত্রনালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।.

 .

মন্ত্রনালয় দুইবার মিটিংও করেছে কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তারা যা চাই তা কে দিবে ? ফলে পদ সৃজনের ফাইলটি ধামাচাপা পড়ে আছে। তিনি আরো জানান ২০১৮ সালে আমি ৬জন শিক্ষক সংযুক্তি করে প্রতিষ্ঠানটি প্রাণবন্ত করে তুলেছিলাম। যথারীতি ক্লাস পরীক্ষা চলতো। আমি অবসর গ্রহনের পর আর কেউ থাকেনি। তিনি অভিযোগ করেন, সরকারী এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি কারো নজর নেই। ঝিনাইদহ সরকারী মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের বর্তমান অধ্যক্ষ ডাঃ আব্দুল মোমেন জানান, থোক বরাদ্দ থেকে স্কুলটির ব্যায় নির্বাহ করা হয়। আমি নতুন যোগদান কায় এখনো পুরোপুরি ভাবে বুঝে উটতে পারিনি। তিনি বলেন, স্টাফ প্যাটার্ন অনুযায়ী একজজন অধ্যক্ষ, সিনিয়র লেকচারার, ৬ জন জুনিয়ার লেকচারার, দুই জন মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট, প্রধান সহকারী, ক্যাশিয়ার, হিসাব রক্ষক, সহকারী হিসাব রক্ষক, পরিসংখ্যান, ড্রাইভার, টাইপিষ্ট, অডিও ভিজুয়াল অপারেটর, স্টোর কিপার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, এমএলএসএস, হোস্টেল সুপার, সহকারী হোস্টেল সুপার, মশালচি, কুক ও নাইটগার্ডসহ ১০৪জন থাকার কথা। কিন্তু পদ সৃজনের বিষয়টি চিঠি চালাচালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। তিনি বলেন দায়িত্ব পালন করে যাওয়া সব অধ্যক্ষরাই সাধ্যমতো পদ সৃজনের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মন্ত্রনালয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা যদি তদ্বীর না করেন তবে কাজ হয়না। সে কারণেই হয়তো ১৩ বছরে প্রতিষ্ঠানটির পদ সৃজন হয়নি।      .

.

ডে-নাইট-নিউজ /

সারাদেশ বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ