
কারেন্ট জাল। এ যেন মৎস্য নিধনের এক মরণ ফাঁদ। 'ভাতে মাছে বাঙালী" এই শ্লোগান এর পরিবর্তে এখন বলতে হয় ডালে ভাতে বাঙালী। মাছের মরণ ফাঁদ নামক কারেন্ট জাল দেশের ভাটি অঞ্চলের নদী-নালা খালে-বিলে হাওর বাওরে সর্বত্র ব্যবহারের কারণে অসময়ে মাছের পোনাসহ নিধন হচ্ছে দেশী বিদেশি প্রজাতির সব রকমের মাছ। বিশেষ করে মাছের বংশ বিস্তারে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই কারেন্ট জাল।.
বৈশাখ জৈষ্ঠ্যমাসে বৃষ্টি শুরু হওয়া থেকে নিয়ে আশ্বিন কার্তিক মাস পর্যন্ত হাওর বাওরের পানিতে ব্যবরিত হচ্ছে কারেন্ট জাল। ফলে মাছের বংশ বিস্তার দুরের কথা এই মরন ফাঁদ কারেন্ট জালের কারণে দেশ থেকে চিরতরে মাছ বিলুপ্ত হতে চলেছে। গত কয়েক বছর ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকার মতো সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার নিম্নাঞ্চলেও এই কারেন্ট জাল অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রসাশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলার অনেক বাজার-হাটে ক্রয়-বিক্রয়ও হচ্ছে এই জাল।.
প্রসাশন সব সময় মাছের মরণ ফাঁদ নামক কারেন্ট জাল মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ী ও জাল বিক্রেতাদের কাছ থেকে তা উদ্ধার করে পোড়ানা হয় এবং তার পাশাপাশি জরিমানাও করা হয়। কিন্তু কে শুনে কার কথা। কথায় আছে না চোর শুনেনা ধর্মের কাহিনী। কুঁড়ি বছর পূর্বে কারেন্ট জাল ছিলো না বিধায় আশ্বিন কার্তিক মাসে পানি কমে এলে নানা জাতের দেশীয় মাছ প্রচুর পরিমাণে ধরা যেতো।.
মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গ্রামের মানুষ উৎসবও করতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে মরণ ফাঁদ নামক কারেন্ট জাল অবাধে ব্যবহার করার কারণে মাছ ধরার সেই উৎসবও ক্রমে বিলিন হচ্ছে।পোনা নিধনের পাশাপাশি সময়ের ব্যবধানে মাছের অভয়ারণ্যও দিন দিন কমে যাচ্ছে। সরেজমিনে মাছ কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে আব্দুল ওয়াহিদ নামের এক মাছ শিকারী বলেন,মাছ কোথায় পাবো? পোনা ছাড়ার সাথে সাথে তা মেরে ফেলা হয়।.
আর যা হয় তা আবার মরন ফাঁদ নামক কারেন্ট জাল দিয়ে একেবারে নিঃশেষ করে দেওয়া হয়। তাই সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ 'ভাতে মাছে বাঙালী" এই শ্লোগানে আবারো উদ্ভুদ্ধ হয়ে দেশের মৎস্য সম্পদকে বাঁচাতে অবিলম্বে কারেন্ট জাল নামক মরন ফাঁদ নিষিদ্ধ করতে হবে।আইন করে কারেন্ট জাল প্রস্তুতকারী ও বিক্রেতাসহ ব্যবহারকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। নতুবা দেশী বিদেশি সকল প্রজাতির মাছ এদেশ থেকে চিরতরে বিলীন হয়ে যাবে।.
এমন ও দেখা যায় যে , অনেকে কারেন্ট জাল পেতে রেখেছে। কিন্তু আরসেমি বা জাল পুরাতন হয়ে যাওয়াতে ঐ জাল আর উত্তোলন করে মাছ ধরে আনেন না। ফলে জালে আটকা পড়া মাছ মরে পচে গলে পানিকে করছে দুষিত।অপর দিকে পুরাতন জাল পাওয়া যায় হাওরে গেলে অনেক দিন আগের। কেহ কেহ পুরাতন জাল হাওরে ফেলে আসে। ফলে যত্র তত্র পাওয়া যায় এ জাতীয় পুরাতন জাল।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার কারেন্ট জাল ব্যবহারকারী মৎস্য শিকারী বলেন, আমরা কি করবো।.
প্রসাশনের উচিৎ কারেন্ট জাল যে স্থানে উৎপাদন হয় সে স্থানে অভিযান চালিয়ে তার উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। তবেই দেশের এই সম্পদ বাঁচানো যাবে। এ বিষয়ে উপজেলা মৎস অফিসের এক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মৎস্য সম্পদ রক্ষার্থে সব সময় অবৈধ কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে। গত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালিয় এই অবৈধ কারেন্ট জাল উদ্ধার করে তা পুঁড়িয়ে দেন।. .
ডে-নাইট-নিউজ / মিজানুর রহমান মিজান, সিলেট ( বিশ্বনাথ)::
আপনার মতামত লিখুন: