• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ০৩ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

৪ বছরেও শেষ হয়না সড়ক নির্মাণ কাজ


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: বুধবার, ০২ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:৩৬ পিএম;
৪ বছরেও শেষ হয়না,   সড়ক নির্মাণ কাজ
৪ বছরেও শেষ হয়না সড়ক নির্মাণ কাজ

৪ বছরেও শেষ হয়না.

সড়ক নির্মাণ কাজ!.

মাটি খননে বর্ষায় যত যন্ত্রণা: ভোগান্তিতে ১০ হাজারো মানুষ.

 .

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের একটি সড়কের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে কিন্তুশুধু মাটি খননেই আটকে আছে সড়ক নির্মাণ কাজটি। ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারদের অবহেলায় আজো থমকে আছে সড়কের কাজ। খননকৃত ওই সড়কটি বর্ষায় কাদা-পানিতে ডুবে এখন রীতিমতো চলাচলের অযোগ্য। হাজারো মানুষ, বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও কৃষকদের পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে।.

 .

 .

স্থানীয়রা বলছেন, ৪ বছরেও কেনো একটি রাস্তা হয়না? কেনো বারবার ঠিকাদাররা এমন অবহেলা কররেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। একদিকে রাস্তাটি কাঁচা অন্যদিকে দীর্ঘ সময় খুঁড়ে ফেলে রাখায় পুরো এলাকা যেন চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে।.

 .

 .

জানা গেছে, হারিজের মোড় থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৩ মিটার প্রশস্ত এই সড়কটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে পিচঢালাইয়ের জন্য ২০২১ সালের ১৪ মার্চ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাফা অ্যান্ড সিনহা এন্টারপ্রাইজ এর সঙ্গে এলজিইডির সড়কটি পাকাকরণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, কাজ শুরু হয় ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি সড়কের শুধুমাত্র মাটি খননের (বক্স কাটিং) কাজ শেষ করেই লাপাত্তা হয়ে যায়। এক বছরের কাজ শেষ না করেই নিরুদ্দেশ হয় প্রতিষ্ঠানটি। ফলে দীর্ঘ সময় সড়কটি অযতœ-অবহেলায় পড়ে থাকে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারের টেন্ডার বাতিল করে। ফের চলতি বছরের মার্চে টেন্ডার আহŸান করে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রায় ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার প্রাক্কলিত ব্যয়ে কাজটি পায় চিরিরবন্দর উপজেলার ‘মনতাজ ট্রেডার্স’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এপ্রিল মাসে ফের রাস্তা খুঁড়ে বালু ফেলা হলেও এরপর থেকে কার্যক্রম আর এগোয়নি।.

 .

 .

ফলে রাজখন্ডা, ফরিদপুর, জুঝারপুর, পাকাপান, দাসপাড়া, শালগ্রাম, পার্বতীপুর, বড়গাছা, লালদীঘি বাজারসহ আশপাশের ১০ গ্রামের হাজারো মানুষ পড়ছেন ভোগান্তিতে।.

এদিকে বর্ষার বৃষ্টিতে রাস্তায় জমেছে পানি, সৃষ্টি হয়েছে কাদার স্তর। ফলে রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও কৃষকরা।.

জুঝারপুর দাসপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ধনী রায়, মদন রায়, ও প্রদীপ রায় অভিযোগ করে বলেন, সড়কটি প্রায় ৪ বছর থেকে এই অবস্থায় আছে। ইতোপূর্বে টেন্ডার হলেও, মাটি খনন করে পালিয়ে যায় ঠিকাদার। এরপর অনেক ধর্না দিয়েও কাজ শুরু করেনি এলজিইডি। আবারো নতুন করে টেন্ডার হয়েছে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু বালু ফেলে ফের লাপাত্তা ঠিকাদার। খননকৃত লাল মাটির সড়কটিতে বৃষ্টির পানি জমে হাঁটু সমান কাদা। ধান বা অন্যান্য কৃষিপণ্য বাজারে নিতে এখন এক বস্তায় খরচ হচ্ছে প্রায় ১০০ টাকা। এছাড়ও স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীরা পড়ছে ভোগান্তিতে। আত্মীয়-স্বজন এই সড়কের কারণে আসতে চায় না।.

 .

 .

একই অভিযোগ পাকাপান গ্রামের বাসিন্দা নবিউল ইসলাম, আব্দুল মজি ও খাদেমুল ইসলামের। তারা বলেন, রাস্তা খারাপ হওয়ায় কৃষিপণ্য ঠিকভাবে বাজারে নিতে পারছি না, লাভ তো দূরের কথা, এখন লোকসানে পড়ছি।.

এলুয়াড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা নবীউল ইসলাম বলেন, রাস্তার কাজ শুরু হলেও অনেকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে জনগণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। আমরা উপজেলা প্রকৌশলীকে বিষয়টি জানিয়েছি।.

উপজেলা প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, নতুন করে টেন্ডার মার্চে হলেও কাজ শুরু হয় এপ্রিল মাসে। কিছু বালু ফেলা হলেও পরবর্তী ধাপে কাজ থেমে গেছে। ঠিকাদার বালু না পাওয়ার কথা বলেছে। আমরা কাজ ত্বরান্বিত করতে তাদের নির্দেশ দিয়েছি।.

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মনতাজ ট্রেডার্সের মালিক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, চুক্তিভিত্তিতে আমবাড়ীর ঠিকাদার মো. বাচ্চুকে কাজ দিয়েছি। তাকেই বলেছি দ্রæত শেষ করতে।.

এ বিষয়ে ঠিকাদার মো. বাচ্চুর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও, তার ভাই সাজু জানান, বালু সাপ্লাইয়ে সমস্যা হয়েছে। তবে এখন বালু ফেলা শুরু করেছি। কিছুটা সময় লাগবে, তারপর পুরো পিচ ঢালাই কাজ শুরু হবে।.

 .

 .

রাস্তার এ দুরবস্থা শুধু একটি অবহেলিত প্রকল্পের চিত্র নয় এটি ওই এলাকার হাজারো মানুষের প্রতিদিনের কষ্টের প্রতিফলন। বৃষ্টি থেমে গেলেও যদি দ্রæত কার্যক্রম শুরু না হয়, তবে জনগণের ক্ষোভ আর দুর্ভোগ আরও বাড়বে এমনটাই আশঙ্কা স্থানীয়দের।.

উল্লেখিত, ২০২১ সালের ১৪ মার্চ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাফা অ্যান্ড সিনহা এন্টারপ্রাইজ এর সঙ্গে এলজিইডির সড়কটি পাকাকরণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, কাজ শুরু হয় ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি সড়কের শুধুমাত্র মাটি খননের (বক্স কাটিং) কাজ শেষ করেই লাপাত্তা হয়ে যায়। এক বছরের কাজ শেষ না করেই নিরুদ্দেশ হয় প্রতিষ্ঠানটি। ফলে দীর্ঘ সময় সড়কটি অযতœ-অবহেলায় পড়ে থাকে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারের টেন্ডার বাতিল করে।এই ঘটনার পর নতুন করে আবারও প্রকল্পটি টেন্ডার ডাকা হয় এবং বর্তমান ঠিকাদার মনতাজ ট্রেডার্স দায়িত্ব গ্রহণ করে। কিন্তু আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তির মতো এবারও ধীরগতির কাজ এবং দীর্ঘ বিলম্ব স্থানীয়দের মনে নতুন করে আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।. .

ডে-নাইট-নিউজ / প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

সারাদেশ বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ