• ঢাকা
  • সোমবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

ফুলবাড়ীতে ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:৪৪ পিএম;
ফুলবাড়ীতে ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব
ফুলবাড়ীতে ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব

কথায় বলে “বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ” আর এই তেরো পার্বণের অন্যতম একটি পার্বণ নবান্ন উৎসব। গ্রামীন উৎসব বলে পরিচিত এই নবান্ন উৎসব। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষকের ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে নবান্ন উৎসব।.

জানা যায়, মাটি ও গোবর গুলিয়ে কিষানিরা বাড়ির উঠান ও ধানের গোলা লেপে পরিপাটি করেন। বাড়ির পুরুষসহ কৃষকরা ধান কেটে আনেন বাড়ির আঙিনায়। ব্যস্ত কৃষক পরিবারের সববয়সী সদস্যরা। নতুন ধানের আঁটি উঠানে আসার পরই তা মাড়াই করে রোদে শুকানো হয়। তারপর চালকলে দিয়ে আতপ চাল আনা হয় । পরে ওই আতপ চাল ঢেঁকি বা জাঁতায় পিষে গুঁড়ি করেন কিষানিরা। সন্ধ্যা হলেই কিষানিরা চালের গুঁড়ি নিয়ে রান্না ঘরে বসে পড়েন নানা পিঠা পায়েস তৈরিতে। দিনভর গতর খাঁটিয়ে কৃষক বসে যান বৈঠকখানা অথবা ওঠোনের এক কোণে। চলে জারি শারি গান। ভেতর থেকে ততক্ষণ বাতাসে পিঠা পায়েসের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে। বাড়ির ছোট ছেলেমেয়েরা পিঠাপুলির স্বাদ উপভোগ করবে। কিষানিরা গুনগুন করে গান গাইবেন। অগ্রহায়ণ এলেই এ যেন উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষক পরিবারের এটাই নবান্নের চিত্র।.

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ধান কাটার উৎসব চলছে। কৃষক-কৃষাণী বসে নেই কেউ। পিঠা-পায়েসসহ নবান্নের আয়োজনে কেউবা ধান কাটছেন, কেউ করছেন মাড়াই। গৃহবধূরা ধান সিদ্ধ করে আতপ চাল ঢেঁকি কিংবা জাঁতায় গুঁড়ো করছেন।.

উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের জুঝারপুর দাসপাড়া গ্রামের গৃহবধূ মিনা রানী রায় ঢেঁকিতে নতুন ধানের চাল থেকে গুঁড়ো করছিলেন। জিজ্ঞেস করতেই বলেন, নতুন ধানের নতুন চাল। নবান্নে এই দিনে পিঠা পায়েস তৈরী করা হয়। আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে খুব মজা করে খাওয়া হয়।
    
আলাদীপুর গ্রামের কৃষক বুদু মিয়া বলেন, একই দিনে গ্রামের সবাই মিলে নবান্ন উৎসবের আয়োজনে খুব মজা হয়। নবান্নের দিনে নতুন ধানের পিঠা-পায়েসসহ ভালো খাবারের আয়োজন হয়।.

পৌরএলাকার কাটাবাড়ী গ্রামের কালীকান্ত রায় ও কমলেশ রায় বলেন, নবান্নে আমরা এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে ব্যপক আকারে নবান্ন উৎসব পালন করি। আত্মীয়স্বজনদের নিমন্ত্রিত করে খাওয়াদাওয়া করানো হয়। বেশ মজা হয় এই নবান্নে।.

শহর থেকে মেয়ে গ্রামে নবান্ন উৎসবে অংশ নিয়েছেন সান্তনা রানী রায়। তিনি বলেন, ধানে পাক ধরলেই বাঙালির ঘরে ঘরে নবান্নের ধুম পড়ে। আমরা প্রতিবছর বাচ্চাদের নিয়ে গ্রামে আসি নবান্ন উৎসব করতে। এটি আমাদের ঐতিহ্য। খুব ভালো লাগে এই দিনে মেয়ে জামাইসহ অনান্য আত্মীয়-স্বজনে ঘর-বাড়ি মুখর হয়ে ওঠে।.

উপজেলার প্রবীণ শিক্ষক নাজিম উদ্দীন মন্ডল বলেন, এই নবান্নের উৎসব শুধু কৃষক পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। প্রতিটা ঘরে ঘরেই নবান্নের উৎসব হতো। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নবান্ন উৎসব উদ্যাপন করত। এখন আর উপজেলার সংগঠনগুলো এ উৎসব করে না। তবে কৃষক পরিবারগুলো চিরাচরিত সে নিয়মেই উৎসব মুখর পরিবেশে নবান্ন উৎসব উদ্যাপন করেন।. .

ডে-নাইট-নিউজ / প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

সারাদেশ বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ