
বিএডিসির খাল এখন কৃষকের গলার কাঁটা.
খনন না করায় ঝিনাইদহে ত্রিশ গ্রামের দশ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে.
.
ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতাঃ প্রথম দেখলে মনে হবে এ এক মহাসমুদ্র। চারিদিকে পানি থৈ থৈ করছে। মাঠের পর মাঠ কৃষকের ফসলী জমি ডুবে আছে। কৃষকের রোপনকৃত হাজার হাজার হেক্টর জমির ধান ক্ষেত পানির নিচে। এ অবস্থায় কৃষকের আহাজারী দিনকে দিন বাড়লেও পানি নিষ্কাশনের কোন উপায় নেই।.
.
সরজমিন দেখা গেছে, ঝিনাইদহের সদর উপজেলার সাধুহাটী ও মধুহাটী ইউনিয়নে বিএডসির খননকৃত খালগুলো ভরাট হওয়ায় তা এখন কৃষকের গলার কাঁটা হিসেবে দেখা দিয়েছে। পানি প্রবাহ না থাকায় মাঠের পর মাঠ ডুুবে আছে। এতে ওই এলাকার ত্রিশ গ্রামের কৃষক পড়েছে বিপাকে।.
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সাধুহাটি ইউনিয়নের বংকিরা, নাথকুন্ডু, ডহরপুকুর, বেজিমারা, ছাইভাঙ্গা, পোড়াহাটি, শরৎগঞ্জ, আসাননগর, ভুলটিয়া, দশমাইল, জীবনে, ওয়ারিয়া, শ্যামনগর, ছয়ঘরিয়া, মামুনশিয়া, চোরকোল, শ্রীপুর, পয়াদপুর, রাঙ্গিয়ারপোতা, ডাকবাংলা, বেড়াশূলা, বাথপুকুর, মাটিকুমরা, নবিননগর, গোবিন্দপুর, যাদবপুর, গোপালপুর, দোবিলা গ্রামের মাঠ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।.
.
এলাকার কৃষকদের ভাষ্য বংকিরা গ্রামের কাজলের খাল, পয়াদপুর খাল এবং মামুনশিয়া খাল দীর্ঘদিন খনন না করায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে গত ৪/৫ বছর ধরে কৃষকরা সঠিকভাবে ফসল ফলাতে পারছে না। এ বছর টানা বৃষ্টিতে মাঠের পানি গ্রামের দিকে ধাবিত হচ্ছে।.
বংকিরা গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে তারা বিএডিসি ঝিনাইদহ দপ্তরে যোগাযোগ করলে কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং ভরাট হওয়া খাল খনন করা হবে বলে জানান। কিন্তু তারা আশার বানী শোনালেও কোন কাজ হয়নি। কৃষকের জীবন মান উন্নয়নের জন্য বংকিরা গ্রামের কাজলের খাল, মামুনশিয়া খাল এবং পয়াদপুর খাল খননের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী বলেও ওই কৃষক জানান।.
.
রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের কৃষক আব্দুল হাকিম জানান, ১০ গ্রামের পানি কাজল খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই পানি ভেদড়ির বিল হয়ে মামুনশিয়া খাল দিয়ে পয়াদপুর খালের মাধ্যমে চিত্রা নদীতে পড়ে। কিন্তু উৎস্যমুখ কাজলের খাল ভরাট হয়ে কচুরিপনায় ছেয়ে গেছে। ফলে পানি বের হতে পারছে না। এতে বংকিরা, গোবিন্দপুর, মোহাম্মদপুর, আসাননগর, মামুনশিয়া ও চুয়াডাঙ্গার জীবনা গ্রামের পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃৃষ্টি হচ্ছে।.
.
স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম মনসাদ জানান, জলাবদ্ধতার বিষয়টি তুলে ধরে তারা এলাকার খালগুলো খননের জন্য বিএডিসির ক্ষুদ্রসেচ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো তিনি দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। এলাকাবাসি দ্রুত খালগুলো সংস্কার করে কৃষকদের জনদুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষার দাবী জানান।.
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ বিএডিসির (সেচ) সহকারী প্রকৌশলী সৌরভ কুমার বিশ্বাস জানান, কৃষকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তিনি সরজমিন পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে মাঠের পর মাঠ পানিতে ডুবে আছে। পানি বের হতে পারছে না। তিনি এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। আশা করা যায় দ্রুত বিষয়টি সমাধান করতে পারবো।.
. .
ডে-নাইট-নিউজ /
আপনার মতামত লিখুন: