• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

কমলনগরের মেঘনায় গলদা চিংড়ির পোনা ধরার মহোৎস


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৭:২৪ পিএম;
কমলনগরের মেঘনায় গলদা চিংড়ির পোনা ধরার মহোৎস
কমলনগরের মেঘনায় গলদা চিংড়ির পোনা ধরার মহোৎস

নাসির মাহমুদ (লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি):  সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মেঘনা নদীতে গলদা চিংড়ির পোনা ধরার মহোৎসব চলছে। মশারী জাল দিয়ে অবাধে এ পোনা শিকারের ফলে ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা; নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। অভিযোগ ওঠেছে, উপজেলা পরিষদের এক জনপ্রতিনিধির সেল্টারে এক শ্রেণির অসাধু লোকেরা প্রকাশ্যে গলদা চিংড়ির পোনা আহরণ ও বিক্রি করলেও উপজেলা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।.

জানা গেছে, ২০০০ সালে সরকার দেশের উপকূলীয় এলাকায় চিংড়ির পোনা আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। সেই থেকে উপকূলীয় এলাকায় সারা বছর গলদা চিংড়ির পোনা আহরণ নিষিদ্ধ থাকলেও সেই নিষেধাজ্ঞা কেউ মানছেন না। প্রশাসনের নজরধারীর অভাবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উপজেলার মেঘনা নদীর বিস্তৃর্ণ এলাকাজুড়ে অবাধে চলছে গলদা চিংড়ির পোনা ধরার মহোৎসব। এ পোনা অতি ক্ষুদ্র হওয়ায় তা ধরতে যে জাল ব্যবহার করা হয় তাতে ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতের মাছের পোনাও।.

সরেজমিন উপজেলার নাছিরগঞ্জ এলাকা ঘুরে জানা যায়, এপ্রিল-জুন এ তিন মাস মেঘনার উপকূলীয় অঞ্চলে গলদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির রেণু অবস্থান করে এবং জোয়ারের সঙ্গে এসব রেণু পোনা নদীর তীরে চলে আসে। আর এ সুযোগে অসাধু এক শ্রেণির মৎস্যজীবী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় গলদা চিংড়ির পোনা ধরতে গিয়ে নদী ও সামুদ্রিক প্রজাতির বিভিন্ন পোনা নিধন করছেন। এতে ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা। স্থানীয় দাদনব্যবসায়ীরা টাকা দিয়ে এ কাজে জেলেদের পোনা শিকারে উৎসাহী করে তুলেন। অর্থের লোভে শিশু-কিশোররাও এ কাজ করছে। তবে, মোকামে প্রতিটি গলদা চিংড়ির পোনা চড়া মূল্যে বিক্রি হলেও ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না বলে জেলেরা জানিয়েছেন।.

চিংড়ির পোনা শিকারী জেলেরা জানান, পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে তাঁরা এ পোনা শিকার করছেন। আর এ পোনা শিকারে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক সাগর এবং তাঁর ছোট ভাই চরমার্টিন ইউপি সদস্য ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সচিব মাহফুজুর রহমান সহযোগিতা করছেন। তাঁদের তত্ত্বাবধায়নেই আহরিত পোনাগুলো ট্রলার ও ট্রাকযোগে মোকামে (খুলনা ও সাতক্ষীরায়) নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। পোনা পরিবহনে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তাঁদের নেতৃত্বে ‘শক্তিশালী’ একটি সিন্ডিকেটও গড়ে উঠেছে। ক্ষমতাসীন হওয়ায় এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পান না।.

স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি সম্পদ রক্ষা জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব হলেও এখানে এর ব্যতিক্রম। এখানে জনপ্রতিনিধির সম্পৃক্ততায়ই সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। আর উপজেলা মৎস্য বিভাগের সঙ্গে যোগসাজশ করেই তাঁরা এ কর্মকা- চালাচ্ছেন। তাঁদের এ অবৈধ কর্মকা-ে একদিকে যেমন মৎস্য সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে; অপরদিকে অসাধু একটি চক্র কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।.

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সাগর অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, চিংড়ির পোনা আহরণ ও পরিবহনের সঙ্গে তাঁরা জড়িত নন। স্থানীয় মৎস্যজীবীরাই এ ব্যবসা পরিচালনা করছেন।  জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, চিংড়ির পোনা নিধন বন্ধে মৎস্য বিভাগ অভিযান পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ীদের কারণে নদী থেকে এ পোনা ধরা বন্ধ করা যাচ্ছে না। তবুও তাঁদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।.

তিনি বলেন, উপজেলা মৎস্য বিভাগের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে। মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ বিষয়ক উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস জানান, মৎস্য সম্পদ রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছেন। পোনা নিধন বন্ধে জোড়ালো অভিযান পরিচালনা করা হবে।. .

ডে-নাইট-নিউজ /

কৃষি বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ