• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

ফুলবাড়ীতে লাগামহীন নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি যেভাবে দাম বেড়েছে সে তুলনায় বাড়েনি আয়


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ০১ মার্চ, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০২:৩৩ পিএম;
ফুলবাড়ীতে লাগামহীন নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি যেভাবে দাম বেড়েছে সে তুলনায় বাড়েনি আয়
ফুলবাড়ীতে লাগামহীন নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি যেভাবে দাম বেড়েছে সে তুলনায় বাড়েনি আয়

ভোগ্যপণ্যের দাম প্রতিনিয়ত লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার সাধারণ মানুষ। করোনার প্রভাবে কাজ হারিয়ে নিয়মিত আয়-রোজগার কমে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় খাদ্য চাহিদা মেটাতেও ব্যর্থ হচ্ছেন তারা।
গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে দেখা গেছে খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামের চিত্র। এর প্রভাব পড়েছে মধ্যবিত্ত, বেকার, চাকরিচ্যুত ও খেটে খাওয়া মানুজনের জীবনযাত্রায়। বর্তমান বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৫৮০ টাকা, ছাগলের (খাসি) মাংস ৭৫০, মুরগি ১৫০-৩৫০ টাকা, মোটা চাল ৪০ টাকা, চিকন চাল ৫০-৮০ টাকা, ইলিশ মাছ ৬০০-৯০০ টাকা, সিংমাছ ৪০০ টাকা, অন্যান্য মাছ ৩০০ টাকা (গড়ে), সোয়াবিন তেল ১৬৫ টাকা, সরিষা তেল ১৯০ টাকা, বিভিন্ন ডাল ১০০-১৪০ টাকা, চিনি ৮০ টাকা, শাক-সবজি (প্রকারভেদে) ১৫-৯০ টাকা, প্রতি পিস ডিম ৮-১৪ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য মসলাসহ নিত্যপন্যের দামও বেড়েছে আকাশচুম্বি। এসব দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি পরিস্থিতিতে নাভিশ্বাস সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে মানুষজন বাড়ি থেকে পরিকল্পনা করে বাজারে গেলেও সে হিসেব পণ্য ক্রয় করতে পারছেন না। এদিকে, বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের দফায় দফায় লকডাউন আর বিভিন্ন বিধি-নিষেধ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ে শ্রমজীবী মানুষেরা। এর প্রভাবে মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়ে। ইতোমধ্যে মধ্যে হু হু করে বেড়ে চলেছে ভোগ্য ও নিত্যপণের জিনিসিপত্রের দাম। এমন দামের কারণে একেবারই বেসামাল সাধারণ মানুষেরা। দিনদিন তাদের ব্যয় বাড়লেও, বাড়ছে না আয়-রোজগার। ফলে সংসার চলাতে হাঁসফাঁস উঠেছে তাদের। বিদ্যমান পরিস্থিতি সামাল দিতে ছিন্নমূল পরিবারের অনেকে বেঁছে নিয়েছে ভিক্ষাবৃত্তি ও চুরি-চামারি কার্যকলাপ।
ইতোমধ্যে শহরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়িসহ রাস্তাঘাটে দিনেদুপুওে চুরিসহ  ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সেই সঙ্গে মানুষের এই অভাব অনটনকে পুঁজি করে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় দাদনেরা। বিভিন্ন পরিবারের লোকজন তাদের দায়ভার সারতে ওইসব সুদারুদের কাছে ধর্না দিচ্ছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দাদন ব্যবসায়ীরা চরা সুদ গ্রহণ করছে। এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে প্রচ- আঘাত হানতে শুরু করেছে। অধিক দামে পণ্যসামগ্রী কেনা ভুক্তভোগীদের বোবা কান্না যেন দেখার কেউ নেই। অস্থির এই বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের সঠিক তদারকি না থাকলে সাধারণ মানুষ আরও বেকায়দায় পড়তে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
আনোয়ারুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, যেভাবে ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, সে তুলনায় আয় বাড়েনি তার। এতে করে পরিবারের চাহিদা পূরণে বাড়ছে ঋণের বোঝা। তিনি আরও বলেন, আগে একাধিক খাবারের আইটেম থাকত। এখন খাদ্যপণ্যের দাম বেশি হওয়ায় খাবারের সেই আইটেম কমানো হয়েছে।
অসীম স্টোরের স্বত্বাধিকারী শ্রী অসীম সাহা বলেন, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাল-ডাল-তেল-মসলাসহ সবধরনের জিনিপত্রের দাম বেড়েছে। এতে করে ক্রেতা সাধারণের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
পৌরএলাকার কাচামাল ব্যবসায়ী হারুন উর রশিদ জানান, বেশি মূল্যে ক্রয় করে বিক্রি করতে হয়, এতে ক্রেতাদের সাথে প্রায় কথা কাটাকাটি হয়।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে তদারকি অব্যাহত রয়েছে। যারা কৃত্রিম সংকট বা অতিরিক্ত দামে খাদ্যপণ্যসহ কৃষিপণ্য বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় বাজার মনিটরিং অব্যবহত থাকবে।
    ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে মনিটরিং করা হচ্ছে।
 .

.

ডে-নাইট-নিউজ / প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

অর্থনীতি বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ