• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর ঠাটবাট যেনো প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: শনিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, ১১:০০ এএম;
তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর ঠাটবাট যেনো প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা
তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর ঠাটবাট যেনো প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা

পৌরসভার প্যাড ব্যক্তিমালিকানা কম্পিউটারে রেখে
ফুলবাড়ী পৌরসভার স্টোর কিপার
রতন চন্দ্রের স্বেচ্ছাচারিতা
.

তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর ঠাটবাট যেনো প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরসভার প্যাড ব্যক্তিমালিকানা কম্পিউটারে রেখে কমিশনের চুক্তিতে দাপ্তরিক কাজ সাড়ছেন পৌরসভার স্টোর কিপার রতন চন্দ্র। তিনি তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারী হলেও ঠাটেবাটে যেনো তিনি প্রথম শ্রেণির কোনো কর্মকর্তা। তার স্বেচ্ছাচারিতায় দুর্ব্যবহারসহ হয়রানীর শিকার পৌরবাসী।   .

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি ফুলবাড়ী পৌরসভার স্টোর কিপার পদে নিয়োগ পান গত ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। পৌরসভার জনবল কম থাকায় তিনি করেন প্রত্যায়ন, নাগরিকত্ব সনদ, উত্তরাধিকার/ওয়ারিশন, আয়ের সনদ, অবিবাহিত সনদ, চারিত্রিক সনদ, সম্পর্কীয় সনদ, লাইসেন্সসহ বিবিধ সনদের কাজ। জানেন না তিনি কম্পিউটার ব্যবহার। নাগরিকদের সাথে দুর্ব্যবহারসহ অর্থ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তিনি পৌরসভার প্যাড পৌরসভার সম্মুখে থাকা ইউনিক কম্পিউটারে দিয়ে রেখেছেন। সেখানেই সাড়ছেন সব কাজ। সেখান থেকে পান তিনি কাজের কমিশন। পৌরসভার কোনো কাজ নিয়ে কেউ আসলে রতন চন্দ্র নিজে কাজটি না করে পাঠান সেই ব্যক্তিমালিকানা কম্পিউটারের দোকানে।    .

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পৌর কর্মচারী জানান, রতন চন্দ্রে দুর্ব্যবহারের কারণে নাগরিকরা কোনো কাজে পৌরসভায় আসতে চান না। তাকে বর্তমান মেয়র কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিতে তিনমাসের সময় দিয়েছেন। কিন্তু তিন মাস পেরিয়ে এলেও তিনি আজো কম্পিউটারে অ, আ লিখতে পারেন না। তাই তিনি সবধরণের কাজ বাহিরে চুক্তিভিত্তিক একটি কম্পিউটারের দোকানে করিয়ে সেখান থেকে কমিশন নেন।    .

এ বিষয়ে অভিযোগকারি জাকিরুল ইসলাম ও আমিনুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন পূর্বে একটি সংগঠনের জন্য প্রত্যায়নপত্র নিতে যেয়ে হয়রানীর শিকার হতে হয় আমাদেরকে। মেয়র মহোদয় নিজেই প্রত্যায়নপত্র দেয়ার জন্য রতন চন্দ্রকে আদেশ করলেও তিনি সে কাজে অনীহা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন প্রত্যায়ন নিবেন তাহলে আগে একটা আবেদন দেন। আবেদন দিলে বিবেচনা করে দেখবো প্রত্যায়ন দেয়া যাবে কি-না। পরে বিষয়টি মেয়রকে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক প্রত্যায়ন দেয়ার নিদেশ দেন। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে দুর্ব্যবহার করেন রতন চন্দ্র। তিনি বলেন আপনাদেরকে মেয়রের কাছে যেতে কে বলেছে? আপনাদেরকে না বললাম আপনারা আবেদন দেন। পরে বলেন পৌরসভার সম্মুখে ইউনিক কম্পিউটার আছে সেখানে যেয়ে আমার নাম বলেন ‘রতন দা’ পাঠিয়েছে। পরে সেখানে গেলে তাদের কম্পিউটারে থাকা ফুলবাড়ী পৌরসভার প্যাডে প্রত্যায়ন দেন ওই কম্পিউটার অপারেটর।     .

আরো ভুক্তভোগী রশিদা বেগম ও সাইফুল ইসলাম বলেন, নাগরিকত্ব ও ওয়ারিশন নিতে গেলে হয়রানী করেন দায়িত্বে থাকা রতন চন্দ্র। ওয়ারিশন ডিজিটাল হয়েছে ডিজিটাল ওয়ারিশন নিতে গেলে মৃত্যু সনদ লাগে কিন্তু সেই ডিজিটাল ছোঁয়া আজো লাগেনি ফুলবাড়ী পৌরসভায়। তবুও ওয়ারিশন নিতে গেলে মৃত্যু সনদ ছাড়া ওয়ারিশন দেন না রতন চন্দ্র। হয়রানী করান বিভিন্নভাবে। কোনো কাজ করতে হলে ইউনিক কম্পিউটারের ঠিকানা বাতায় দেন। পৌরসভার কাজ বাহিরের কম্পিউটার থেকে করতে হচ্ছে। অর্থ ছাড়া করতে চান না কোনো কাজ। এতে পৌরবাসী সুবিধার স্থানে হয়রানী শিকার হচ্ছেন এবং অর্থ খোয়াচ্ছেন।  .

ইউনিক কম্পিউটারের সত্ত্বাধিকারী বলেন, পৌরসভার সকলধরনের কাজ আমাদের দোকান থেকে করান পৌরসভার রতন চন্দ্র। তাই কম্পিউটারে তৈরি পৌরসভার প্যাড রাখা আছে। 
অভিযুক্ত পৌরসভার স্টোর কিপার রতন চন্দ্র বলেন, ইউনিক কম্পিউটারে অফিসের প্যাড রাখা নেই তবে মানুষের সাময়িক সমস্যার জন্য কম্পিউটারে তৈরি করা প্যাডে সেখান থেকে জরুরি কাজগুলো করা হয়। কম্পিউটারের দোকানে শুধু স্মারক নম্বর লিখার জন্য ‘স্মারক নং- ফুপৌস/সাধা/ওয়ারিশ/২০২১-২০২২/’ পর্যন্ত দেয়া থাকে পরে খাতা দেখে পরবর্তী অফিসিয়াল ডিজিট বসিয়ে দেই। মেয়র মহোদয় আমাকে কম্পিউটার শিখতে বলেছেন ইতোমধ্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছি। এখন থেকে সব কাজ পৌরসভার কম্পিউটারেই করবো।   .

পৌরসভার মেয়র মো. মাহমুদ আলম লিটন বলেন, পৌরসভার প্যাড কিভাবে পৌরসভার বাহিরে গেলো তা আমার জানা নাই। স্টোর কিপার রতন চন্দ্রকে সময় দেয়া হয়েছে কম্পিউটার শেখার জন্য। তবে রতন চন্দ্র যদি নাগরিকের সাথে দুর্ব্যবহার করে থাকে এবং পৌরসভার প্যাড বাহিরে দিয়ে সেখান থেকে কাজ করান তবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, পৌরসভার প্যাড বাহিরে রেখে কেউ দাপ্তরিক কাজ করিয়ে থাকে। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ সেই কর্মচারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করতে পারবে। 
 . .

ডে-নাইট-নিউজ / প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

সারাদেশ বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ