
নাসির মাহমুদ (লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি): উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা এখন যেন এক মৃত্যুকূপ। ঝড়, জোয়ার-জলোচ্ছ্বাস ও মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক পানির স্থায়ীত্বে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পাঁচটি নদীঘেঁষা ইউনিয়নসহ অন্যান্য সংযুক্ত এলাকায় পাকা সড়কগুলোতে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে।.
.
.
.
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের বিপরীতে সংস্কারকৃত সড়কগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ সাইক্লোন ও রেমালের আঘাতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে ২২ কোটি টাকার অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া সড়কের ৩৪টি কালভার্ট ভেঙে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, যার ফলে অতিরিক্ত আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর জানিয়েছে।.
ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর মধ্যে রয়েছে— চরজাঙ্গালিয়া মিয়াপাড়া সড়ক, সেলিম সড়ক, চরফলকন-পাটারীহাট সড়ক, চরজগবন্ধু কলেজ সড়ক, হাজিরহাট-মিয়াপাড়া-কলেজ সড়ক, করুনানগর বাজার সড়ক, উত্তর চরমার্টিন-বলিরপোল সড়ক, লরেন্স খাসেরহাট-জগবন্ধু সড়ক, হাজিরহাট-খায়েরহাট-লুধুয়া হাইস্কুল সড়ক, ইসলামগঞ্জ বাজার-করইতলা-নাসিরগঞ্জ বাজার সড়ক, মুজিব সড়ক, হাজিরহাট-মিয়াপাড়া-ফজুমিয়ারহাট সড়ক, হাজিরহাট-জাঙ্গালিয়া তোয়াহা সড়ক, জাগরণী কেজি স্কুল-লরেন্স বোর্ড অফিস সড়ক, লরেন্স মার্টিন সড়ক, চরঠিকা-চরবসু-জাহাজ মারাঘাট বাজার সড়ক ও ইসলামগঞ্জ-চরকাদিরা জিপিএস সড়ক।.
.
.
চরলরেন্স ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মাওলানা সাইয়েদ আনোয়ার বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি অতিরিক্ত লোডের গাড়ি চলাচলের কারণে লরেন্স-নবীগঞ্জ সড়কটি মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রশাসনের চোখের সামনে এই দুরবস্থা চলছে। প্রতিদিনই একাধিক দুর্ঘটনা ঘটছে।”.
তিনি আরও বলেন, “দৈনন্দিন যাতায়াতে মানুষকে তিন থেকে চারগুণ বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে।”.
উপজেলা বিকল্পধারা সাধারণ সম্পাদক মো. ছিদ্দিক মিয়া জানান, “হাজিরহাট-ফজুমিয়ারহাট সড়কের মিয়াপাড়া এলাকায় একটি কালভার্ট দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে পড়ে আছে। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দ্রুত এটি মেরামত করা হলে দুর্ঘটনা ও জনদুর্ভোগ কমবে।”.
এ বিষয়ে কমলনগর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদের মোজাহিদ বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে উপজেলার প্রধান পাকা সড়ক ও ছোট ছোট রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিটি রাস্তার বাস্তব চিত্র সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া মাত্রই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।”.
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাহাত উজ জামান বলেন, “দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো পরিদর্শন করেছি। সড়কগুলো দ্রুত সংস্কারের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করা হয়েছে।”.
. .
ডে-নাইট-নিউজ /
আপনার মতামত লিখুন: