• ঢাকা
  • সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২০ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

আমাদের গৌরবোজ্জ্বল বিজয়ের দিন ১৬ই ডিসেম্বর


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৮:৪৭ পিএম;
আমাদের গৌরবোজ্জ্বল বিজয়ের দিন ১৬ই ডিসেম্বর
আমাদের গৌরবোজ্জ্বল বিজয়ের দিন ১৬ই ডিসেম্বর

মিজানুর রহমান মিজান: আমাদের অহংকারের, গৌরবের, বীরত্বের, অর্জনের সুমহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের দিন, পাকহানাদারদের পরাজয় ও আত্মসমর্পনের দিন মহান জাতীয় দিবস ১৬ই ডিসেম্বর।মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা বাংলাদেশের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশের ভারত পাকিস্তান বিভক্তি তরুণ শেখ মুজিব মেনে নিতে পারেননি।না মানতে পারার কারনেই ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভুমিকায় হন অবতীর্ণ। তিনি তাঁর দুরদর্শিতা, বিচক্ষণ নেতৃত্ব, দুর্ধর্ষ সাহস নিয়ে স্বাধীনতার দু:সাহসিক অভিযাত্রায় এগিয়ে যেতে থাকেন নির্ভীক চিত্তে।জীবন যৌবনের ১৩টি বৎসর কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্টে ব্যয়িত করেন।ফাঁসির মঞ্চেও যেতে হয়েছে তিনিকে। কিন্তু কোন কিছুতেই আদর্শ ও লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে আপোষ করেননি এক বিন্দু।দু:সাহসিক নাবিক বাঙালীর মহাকাব্যের মহানায়ক তাঁর অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা ও অমিত তেজস্বী গমগমে কণ্ঠের ভাষণে সমগ্র জাতিকে শোষণ, বঞ্চনার বিরুদ্ধে ভাষার লড়াই থেকে গণতন্ত্রের পথে উত্তোরণের সংগ্রামে স্বাধিকার ও স্বাধীনতার পথে টেনে আনতে উনসত্তরের গণঅভুত্থানে পূর্ব বাংলার জনতার মঞ্চে আবির্ভুত হন অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু উপাধিতে।১৯৭০ সালের গণরায়ে তাঁর আকাশচুম্বী ইমেজের উপর নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ী করে বিশ্ববাসীর সম্মুখে একক এক যাদুকরী নেতায় হন পরিণত।তিনির প্রদত্ত ছয় দফা ছিল বাঙালীর ও স্বাধীনতার সনদ।.

১৯৬৯ ছিল ইতিহাসের মোড় ঘুরানো একটি বাঁক স্বরুপ।আর ১৯৭০ সালে ছিল সাংবিধানিক ভাবে গণরায়ের ঐতিহাসিক বিজয় প্রাপ্তি।১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ সমগ্র জাতিকে একই প্লাটফর্মে এনে দাড় করিয়ে দিয়েছিলেন মহান স্বাধীনতার ডাক।গোটা জাতি হয়ে উঠে ৭ই মার্চের ভাষণে উদ্বেলিত,অগ্নি ঝরা মন্ত্রে যেন উত্তাল হয়ে পড়ে সমগ্র বাংলা।মার্চ মাসে ইয়াহিয়ার শাসন স্তব্ধ হয়ে শেখ মুজিবের শাসনই যেন কার্যত চলছিল পূর্ববাংলায়।তাঁর দীর্ঘ সংগ্রামে একটি জাতিকে বীরত্ব গাঁথায় করেছিলেন উদ্বুদ্ধ।অগণিত সংগ্রামীকে স্বাধীনতার সৈন্য রুপে গড়ে তুলেছিলেন।
    ছাত্রলীগ থেকে যেমন অসংখ্য জাতীয় বীর সৃষ্টি করেন।তেমনি আওয়ামীলীগ থেকেও রাজনীতিতে জনমুখী অনেক রাজনৈতিক নেতা তৈরী করেছিলেন। সে সঙ্গে সামরিক বাহিনীর বাঙালী অনেক অফিসারসহ সিভিল প্রশাসনের অনেকের সঙ্গে ছিল যোগাযোগ প্রক্রিয়া অব্যাহত। এমন কি নানা শ্রেণী পেশার দায়িত্ববান মানুষের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গড়েছিলেন নবতর প্রক্রিয়া।যে কারনে ২৫ শে মার্চের কালোরাতে পাকহানাদারদের প্রতিরোধ করতে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন।হয়েছিলও তাই। নানা প্রকার ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে জাতিকে স্বাধীনতার ও স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।সুতরাং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ, ছাত্র, জনতা , কৃষক , শ্রমিক সকলেই অনুপ্রাণিত হয়ে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন বীর বিক্রমে। ইন্দিরা গান্ধীর শাসনামলে বন্ধু প্রতীম ভারতের সহযোগিতার প্রস্তুতিও চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছেছিলেন।যে কারনে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার পর আওয়ামীলীগ নেতাগণ কলকাতায় আশ্রয় নেন এবং ভারতের প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অস্ত্র, অর্থ ও প্রশিক্ষণ সহায়তা প্রদান করেছেন। এমন কি ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের নিমিত্তে গণহত্যার বিপক্ষে বিশ্ব জনমত গঠনে সাহসী ও অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছেন।ক্ষুদ্র একটি অংশ ব্যতীত সমগ্র জাতি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল।
   ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মাধ্যমে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান সার্বভৌমত্ব প্রাপ্ত হয়ে "বাংলাদেশ" নামধারণ পূর্বক  পূর্ণ-স্বাধীনতা প্রাপ্ত হয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে সম্পূর্ণ একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রে লাল সবুজের পতাকা নিয়ে আবির্ভুত হয় । ভারত পূর্বপাকিস্তানের এই স্বাধীনতা যুদ্ধে নিঃস্বার্থ সহায়ক হয়েছিল অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক , সামরিক ও সামাজিক ক্ষেত্রগুলোতে । যে সকল বীর ও বীরাঙ্গনারা এই স্বাধীনতা আনয়ন করেছিলেন, তাঁদের উদ্দেশে বিনম্র শ্রদ্ধা এবং সশ্রদ্ধ  অভিবাদন  নিবেদন করছি। সে সাথে আপামর বাংলাদেশ-বাসীকে শুভ বিজয় মাসের হার্দিক শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি। বীরত্বের সহিত মুক্তিযোদ্ধারা লড়াই চালিয়ে যেতে গিয়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধা রনাঙ্গনে শহীদ হন এবং অনেকে পাকহানাদার বাহিনীর হাতে ধৃত হয়ে অমানসিক নির্যাতনের শিকারের মাধ্যমে শহীদ হন।অগণিত ঘরবাড়ি হানাদাররা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়।একটা দেশকে ধ্বংস করার সকল প্রকার কলাকৌশল অবলম্বন করতে মোটেই পিছপা হয়নি।দেশটাকে একটা ধ্বংস স্তুপে পরিণত করেছিল।অনেক মা-বোন সম্ভ্রম হারানোর মাধ্যমে এবং শহীদের রক্তে বাংলার সবুজ ভুমি রক্তাক্ত করে আমাদের বিজয় অর্জন করেন।আমরা হয়েছিলাম বিজিত। লাল সবুজের পতাকা বিশ্ব মানচিত্রে ঠাই করে নিয়েছিল।সকল শহিদানদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি বিনম্রতায় মহান আল্লাহর দরবারে।.

লেখক মিজানুর রহমান মিজান সাবেক সভাপতি বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব, বিশ্বনাথ, সিলেট।    
 . .

ডে-নাইট-নিউজ /

জাতীয় বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ